বিনা ফাতিহায় জানাযা!
লেখক : শাইখ আব্দুল মান্নান বিন হিদায়াতুল্লাহ
তৃতীয় প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০২১
প্রকাশনী : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
গায়ের দাম : 40 টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যা-32
প্রকাশনায় : দারুল কারার পাবলিকেশন্স
পরিবেশনায় : তাওহীদ পাবলিকেশন্স
সূচিপত্র…
সলাতে জানাযা সূরা ফাতিহা ছাড়া শুদ্ধ হবে না ৪
হানাফী বড় পীর সাহেবের ফাতওয়া ১২
সলাতে জানাযাতেও মুক্তাদিগণ সূরা ফাতিহা পাঠ করবে ১৫
লেখকের অন্যান্য বই ১৬
সলাতে জানাযা সূরা ফাতিহা ছাড়া শুদ্ধ হবে না
পরকালে বিশ্বাসী প্রত্যেক মুসলমানই বিশ্বাস করেন যে, মানুষ মাত্রই ভুলের পাত্র। প্রত্যেকের গুনাহ খাতা আছে। আর মানুষের পাপের কারণেই জাহান্নাম ও কবরে আযাব থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আল্লাহর রাসূল (সা.) সলাতে জানাযার বিধান নির্ধারণ করেছেন। যাতে জীবিত মুসলমান তাদের মৃত মুসলমান ভাই-বোনদেরকে সর্বাপেক্ষা মহান ইবাদত সলাতের মাধ্যমে সরাসরি আল্লাহ রাহমানুর রাহীমের নিকট সুপারিশ করে কবর ও জাহান্নামের আজাব থেকে উদ্ধার করতে পারেন। আর বহু বিশুদ্ধ হাদীস থেকে জানা যায়, সূরা আলহামদু ছাড়া কোন সালাত সাধনারই অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না।
একমাত্র সূরা ফাতিহাই এমন একটি সূরা যাকে উম্মুল কুরআন, উম্মুল কিতাব তথা সম্পূর্ণ কুরআনের জননী ও সম্পূর্ণ পবিত্র গ্রন্থের সারাংশ ও মূল বলা হয়েছে। অর্থাৎ এই সূরা ফাতিহার মধ্যেই সংক্ষিপ্ত ভাষায় গোটা কুরআন ও গোটা কিতাব ভরা আছে। তা ছাড়া এটি এমনি একটি সূরা যার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলাকে রাহমানুর রাহীম বলে আহ্বান করা হয় এবং তাঁকে বিচারপতি বলে ডাক দেয়া হয় এবং স্বল্প কথায় তাঁর প্রশংসাও করা হয়।
তাই শরীয়ত সূরা আল ফাতিহাকে সকল সলাতের জন্য অপরিহার্য করে দিয়েছে। আমাদের মাইয়্যেত ভাই-বোনেরা দুনিয়াবী সকল প্রকার বাহ্যিক আশ্রয় স্থল থেকে বঞ্চিত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে একমাত্র রাহমানুর রাহীম আল্লাহর আশ্রয়ে কবরস্থ হয়।
আল্লাহর নাবী (সা.) রাহমানির রাহীম শব্দ বিশিষ্ট আল-হামদু সূরাটি মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে সলাতে জানাযায় পাঠ করতেন।
কেননা, সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহার পাঠ এ ইঙ্গিতই বহন করে যে, সলাতে জানাযায় মুসল্লীবৃন্দ আল্লাহর নিকট নিরাশ্রয় মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে সূরা ফাতিহা পাঠের মাধ্যমে এই বলে সুপারিশ করে যে, হে করুণাময় কৃপানিধান রাহমানুর রাহীম আল্লাহ, এই নিরাশ্রয় মাইয়্যেতের আর কোনই আশ্রয় নেই, তুমিই একমাত্র তার আশ্রয়স্থল।
আর তুমি হচ্ছো রাহমানুর রাহীম। ফলে আমরা সম্মিলিতভাবে একমাত্র তুমিই রাহমানুর রাহীমের রহমতের বুকভরা আশা নিয়ে আমাদের এই অসহায় নিঃসহায় মাইয়্যেত ব্যক্তিকে তোমারই রহমতের আশ্রয়ে কবরস্থ করছি। হে রাহমানুর রাহীম আল্লাহ, তোমার নাবী (সা.) ইরশাদ করেছেনঃ
فَأَخْلِصُوْا لَهُ الدُّعَاءَ
তোমরা মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে খালিস ও খাঁটি অন্তরে দু‘আ কর। আর তোমার নাবী (সা.) এর মারফতে আমরা এও জ্ঞাত হয়েছি, তোমার হামদ ও তোমার নাবীর উপর দরূদ পড়ে দু‘আ করলে তুমি দু‘আ কবুল কর। ফলে আমরা তোমারই শিক্ষা দেয়া সর্বাপেক্ষা উত্তম হামদবিশিষ্ট সূরা আল-হামদুর মাধ্যমে তোমাকে রাহমানুর রাহীম বলে পুনঃপুনঃ আহ্বান করছি আর তুমি যেহেতু একমাত্র রহম করমের মালিক
আর তুমি যেহেতু একমাত্র বিচার-বিবেচনার অধিপতি; তাই তোমাকে পুনঃপুনঃ রাহমানুর রাহীম ও বিচারপতি বলে আহ্বান করে, একমাত্র তোমারই রহম ও করুণার আশাবাদী হয়ে তোমারই পাপী-তাপী বান্দাকে তোমার অসীম রহমতের মহান আশ্রয়ে কবরস্থ করছি।
এসব মাহাত¥্য ও রহস্যের প্রতি লক্ষ্য করে খোদ আল্লাহর নাবী (সা.) ভ্রমের পুতুল আদম সন্তান-সন্ততির সলাতে জানাযায় দরূদসহ উক্ত রহমাতবিশিষ্ট সূরা ফাতিহা নিজে পড়তেন ও স্বীয় সহচরবৃন্দকে তা পাঠ করার নির্দেশও দান করতেন। তাছাড়া অন্যান্য সলাতকে যেমন সালাত বলা হয়েছে, আর ঠিক শরীয়তের পরিভাষায় নামাযে জানাযাকেও সালাত বলা হয়েছে।
সূরা ফাতিহা সলাতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হবার কারণেই খোদ আল্লাহ তা‘আলা সূরা ফাতিহাকে সালাত বা নামায নামে অভিহিত করেছেন। আর তাঁর রাসূল (সা.) উক্ত কারণের প্রেক্ষিতে এরশাদ করেছেন:
لَا صَلٰوةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
যারা নামাযে ফাতেহাতুল কিতাব পাঠ করে না তাদের নামাজই হবে না। (বুখারী ৭৫৬, মুসলিম ৩৯৪, আবূ দাঊদ ৮২২, তিরমিজী ২৪৭, ৩১১, ৩১২, নাসায়ী ৯১০, ৯১১, দারাকুতনী ১৭, সুনান সুগরা ৩৫৯, সুনান কুবরা ২৪৫৯, ৩০৩০, মু‘জামুস সগীর লিত্-তাবারানী ২১১, আল-মুনতাক্বা লি ইবনি জারূদ ১৮৫, সুনান নাসায়ী কুবরা ৯৮২, ৯৮৩, মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ১৩৪, মিশকাতুল মাসাবীহ)
এ কারণেই নাবী (সা.) হতে সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠের প্রমাণে বিশুদ্ধ কয়েকটি হাদীস রয়েছে। তন্মধ্যে নিম্নে কতিপয় হাদীস উল্লেখ করছি।
তালহা বিন আব্দুল্লাহ বিন আউফ (রা.) বলেছেনঃ
صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عَبَّاسٍ عَلٰى جَنَازَةٍ فَقَرَأَ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ فَقَالَ لِتَعْلَمُوْا أَنَّهَا سُنَّةٌ
আমি এক জানাযায় আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.)-এর পশ্চাতে সলাতে জানাযা পড়ি। (তাতে) তিনি সূরা ফাতিহা পড়েন এবং বলেন, (আমি সশব্দে সূরা ফাতিহা এ জন্য পাঠ করলাম যাতে তোমরা জ্ঞাত লাভ কর যে, তা সুন্নাত) অর্থাৎ সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ করা আল্লাহর নাবীর (সা.) নির্ধারিত বিধান। (উক্ত হাদীসটি বুখারী শরীফের বরাতে মিশকাতুল মাসাবীহ, কিতাবুল জানায়েযে, আধুনিক প্রকাশনী ২৫ শিরিস দাস লেন, ঢাকা- ১ মুদ্রিত সহীহ বুখারীর বঙ্গানুবাদ প্রথম খন্ড ৫৪ পৃষ্ঠাতে এবং ১৯৬৮ ইং সালে বাংলা একাডেমী কর্তৃক মুদ্রিত তাজরীদুল বুখারীর (১) ২৮৪ পৃষ্ঠাতেও রয়েছে।)
কিন্তু মহা অনুতাপের বিষয়, এসত্ত্বেও হানাফী সম্প্রদায় আল্লাহর নাবী (সা.)-এর নির্ধারিত বিধান মতে সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা আরম্ভ না করে আল্লাহর অমনোনিত ও আল্লাহর অনির্ধারিত ব্যক্তি ইমাম আবূ হানীফার কথা মতো তাদের মৃত ব্যক্তিগণকে বিনা ফাতিহায় কবরস্থ করছেন।
একটু তলিয়ে দেখলে বুঝা যায়, তারা স্বীয় অসহায় নিঃসহায় মৃত ব্যক্তিগণকে বিনা সলাতে জানাযায় দাফন করছেন। কেননা, একটু আগে সহীহ বুখারী ইত্যাদির হাদীস থেকে দেখানো হলো যে, বিনা সূরা ফাতিহায় কোন সলাতেরই অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না।
উক্ত সহীহ বুখারী ছাড়াও সুনানে নাসায়ী ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থে সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠের স্বপক্ষে আরও বহু হাদীস রয়েছে। তন্মধ্যে কতিপয় হাদীস উদ্বৃত করা গেল। আর সাথে সাথে উক্ত হাদীস বিষয়ে উচ্চস্তরের যে সব হাদীস বিশারদ মুহাদ্দিস মণ্ডলী অভিমত ব্যক্ত করেছেন তাঁদের কতিপয়ের মন্তব্য নিম্নে উল্লেখ করা হবে ইনশাআল্লাহ; যাতে সত্যান্বেষী ভ্রাতা-ভগ্নিগণ সত্যের সন্ধান লাভে সক্ষম হন।
সুনানে নাসায়ীতে ওসমান (রা.)) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন:
السُّنَّةُ فِي الصَّلٰوةِ عَلَى الْجَنَازَةِ أَنْ يَّقْرَأَ فِي التَّكْبِيْرَةِ الْأُوْلٰى بِأُمِّ الْقُرْآنِ مُحَقَّقَةً.
সলাতে জানাযায় প্রথম তাকবীরে সূরা ফাতিহা পাঠ সুনিশ্চিত সুন্নাত অর্থাৎ খোদ আল্লাাহর রাসূলের (সা.) নির্ধারিত বিধান।
আল্লামা শায়খ উবাইদুল্লাহ রাহমানী (রহ.) উক্ত হাদীস বিষয়ে তাঁর মিশকাত শরীফের অপূর্ব ভাষ্য ‘মিরআতুল মাফাতীহ’ গ্রন্থে মন্তব্য করেনঃ
حَدِيْثُ أَبِيْ أُمَامَةَ عِنْدَ النَّسَائِيِّ بِإِسْنَادٍ عَلٰى شَرْطِ الشَّيْخَيْنِ
নাসায়ীতে বর্ণিত আবূ উমামা (রা.)-এর হাদীসটির সূত্র সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীসের শর্তভিত্তিক। অর্থাৎ হাদীসটি সম্পূর্ণ নিখুঁত ও বিশুদ্ধ।
অতঃপর আল্লামা রাহমানী (রহ.) বলেন, হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) তাঁর বিশ্ববিশ্রুত সহীহ বুখারীর ভাষ্য ফাতহুল বারীর বরাতে লেখেছেন, আবূ উমামা বলেছেন:
السُّنَّةُ فِي الصَّلٰوةِ عَلَى الْجَنَازَةِ أَنْ يُّكَبِّرَ ثُمَّ يَقْرَأُ بِأُمِّ الْقُرْآنِ ثُمَّ يُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ ؞ يُخْلِصُ الدُّعَاءُ لِلْمَيِّتِ وَلَا يَقْرَأُ فِي الْأُوْلٰى قَالَ الْحَافِظُ إسْنَادُهُ صَحِيْحٌ.
মাইয়েতের সলাতে জানাযায় তাকবীর তাহরীমা উচ্চারণ পর সূরা আল ফাতিহা, অতঃপর নাবী (সা.)-এর উপর দরূদ, তার পর মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে খাঁটি অন্তরে দু‘আ পাঠ করা সুন্নাত। প্রথম তাকবীর ছাড়া বাকীগুলোর পর কিরাত পাঠ সুন্নাত নয়। হাদীস শাস্ত্রের মহাপণ্ডিত হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) মন্তব্য করেছেন, হাদীসটির বর্ণনা সূত্র বিশুদ্ধ। সহীহ বুখারী ও উক্ত নাসায়ী ইত্যাদির বিশুদ্ধ হাদীসগুলো উদ্বৃত করার পর আল্লামা রাহমানী মন্তব্য করেনঃ
وَالْحَدِيْثُ دَلِيْلٌ عَلٰى مَشْرُوْعِيَّةِ قِرَاءَةِ فَاتِحَةِ الْكِتَابِ فِي الْجَنَازَةِ –
সলাতে জানাযায় সূরা আল ফাতিহা পাঠ শারয়ী বিধানভিত্তিক হবার স্বপক্ষে অত্র হাদীসগুলো প্রামাণ্য দলীল। সলাতে জানাযায় সূরা ফাতেহা পাঠের এতগুলো বিশুদ্ধ হাদীসের বর্তমানেও একদল লোক বলেন, সলাতে জানাযায় রুকূ‘ও নেই, সিজদাও নেই, ফলে তা তাওয়াফের অনুরূপ। তাওয়াফ অনুষ্ঠানটি বিশুদ্ধ হবার জন্য যেমন সূরা আল ফাতিহার প্রয়োজন নেই, ঠিক তেমনই সলাতে জানাযাও বিশুদ্ধ হবার জন্য কিরআতের মুখাপেক্ষী নয়।
এর জবাবে বলা হয়েছে, এটা সুষ্পষ্ট সহীহ হাদীসের মোকাবেলায় নিছক মনগড়া কিয়াস যা সম্পূর্ণ নাজায়েয। তাছাড়া তাওয়াফকে কেউ সালাত বা নামায নামে অভিহিত করেননি। আর জানাযাকে খোদ শরীয়ত সালাত বা নামায বলে নির্দেশ করছে। ফলে শরীয়ত সলাতে জানাযায় যেগুলো বাদ রেখেছে, সেগুলো ছাড়া অন্যান্য সলাত শুদ্ধ হওয়ার জন্য যে কিরায়াত ইত্যাদির প্রয়োজন, সলাতে জানাযাতেও সে কেরাত ইত্যাদির প্রয়োজন।
তাছাড়া সকল মুসলমান এ বিষয়ে একমত যে, সলাতে জানাযায় তাকবীর তাহরীমা, কিয়াম, নিয়্যাত, সালাম, কিবলাহ্মুখী হওয়া এবং পবিত্রতা জরুরী। এগুলো ব্যতীত সলাতে জানাযা প্রতিষ্ঠিত হবে না। এসব থেকে পরিষ্কার বুঝা যায়, সলাতে জানাযা তাওয়াফ অনুষ্ঠানের মত নয়, সাধারণ সলাতের সাথে বরং অনেক গুণে বেশী মিল রয়েছে।
সারকথা, জানাযা অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ সলাত- তাওয়াফের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। ফলে অন্যান্য সলাতে যেমন কিয়াম, কিরায়াত অপরিহার্য, বিনা ফাতিহায় যেমন অন্যান্য সলাতের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না, ঠিক তেমনি সলাতে জানাযারও বিনা কিরায়াতে অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে না। সত্যিকার অর্থে জানাযাপর্ব যে সম্পূর্ণ সলাত আর সকল সলাতেই যে সূরা ফাতিহা অপরিহার্য তার স্বপক্ষে আল্লামা রাহমানী (রহ.) বলেনঃ
اَلْحَقُّ وَالصَّوَابُ أَنَّ قِرَاءَةَ الْفَاتِحَةِ فِيْ صَلٰوةِ الْجَنَازَةِ وَاجِبَةٌ كَمَا ذَهَبَ اِلَيْهِ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ وَغَيْرُهُمْ لِاَنَّهُمْ أَجْمَعُوْا عَلٰى أَنَّهَا صَلٰوةٌ وَثَبَتَ حَدِيْثٌ لَا صَلٰوةَ إلَّا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ فَهِيَ دَاخِلَةٌ تَحْتَ الْعُمُوْمِ إخْرَاجُهَا مِنْهُ يَحْتَاجُ إِلٰى دَلِيْلٍ-
বাস্তব ও যথার্থ কথা এই যে, সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ ওয়াজিব। ইমাম শাফেয়ী (রঃ), ইমাম আহমাদ (রহ.), ইমাম ইসহাক (রহ.) প্রমুখ আয়েম্মায়ে দ্বীন এ বিষয়ে একমত যে, জানাযা অনুষ্ঠানটি সলাতের অন্তর্ভুক্ত। আর এটা সুপ্রমাণিত যে, সূরা ফাতিহা ব্যতীত কোন সলাতই সহীহ হয় না। হাদীসের এই ব্যাপকতা সাধারণভাবে সকল সলাতের উপর প্রযোজ্য হবে। সলাত সাধনা থেকে সলাতে জানাযাকে যে বাদ দিতে হবে তার স্বপক্ষে কোনই দলীল নেই।
সহীহ বুখারী, নাসায়ী ইত্যাদির ফে’লী হাদীস ছাড়া কাউলী হাদীস থেকেও জানা যায়, আল্লাহর রাসূল (সা.) সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠের নির্দেশ দান করেছেন। যথা ইবনু মাজাহতে উম্মু শারীক হতে কিঞ্চিত দূর্বল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন:
اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ ؞ أنْ نَقْرَأَ عَلَى الْجَنَازَةِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ.
রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের (মুসলমানদের) নির্দেশ দান করেছেন, আমরা যেন সলাতে জানাযায় সূরা ফাতিহা পাঠ করি।
অত্র হাদীসের সমর্থনে তাবারানী কাবীর গ্রন্থে হাদীস রয়েছে। উম্মু আকীফ (রা.) বলেছেনঃ
اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ ؞ أنْ نَقْرَأَ عَلٰى مَيِّتِنَا بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ.
আল্লাহর রাসূল (সা.) আমাদের (মুসলমান) মাইয়্যেতের জানাযায় সূরা আলহামদু পাঠ করা মুসলমানদের প্রতি অপরিহার্য করেছেন।
Reviews
There are no reviews yet.