ইলমে গায়েব
বই: ‘ইলমে গায়েব
প্রণেতা: অধ্যাপক আব্দুন নূর সালাফী
প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলকিশেন্স
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪৮
কভার: পেপার ব্যাক
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: ইলমে গায়েব
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলকিশেন্স
ইলমে গায়েবের মাসয়ালাটি খুবই সূক্ষ্ম, ঝুঁকিপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। বুঝলে পানির মতোই সহজ – নইলে, পাথরের চেয়েও কঠিন এবং মাকড়সার জালের চেয়েও জটিল মনে হবে। ফলে, গোমরাহ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে! বহু আলেমকে দেখেছি যে, এ নিয়ে আলোচনা বা বিতর্ক করতে গিয়ে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেন! ফলে, নিজেরাতো গোমরাহ হনই, বরং অনুসারীদেরও গোমরাহ করে ফেলেন; এমনকি অনেকে না বুঝে কুফরি মন্তব্য করে কাফেরের খাতায় পর্যন্ত নাম লিখিয়েছে (মা‘আযাল্লাহ)। উল্লেখ্য, সুন্নী মুসলিম ও ওয়াহাবীদের মাঝে আকীদাগত প্রধানতম পার্থক্য রয়েছে, এ মাসয়ালায়। কেননা, এতে হাজির-নাযির, মীলাদ ও কিয়াম শরীফ এবং নবী-ওলীগণের দূর থেকে বা তাঁদের ইন্তেকালের পরে দুনিয়াবাসীকে সাহায্য করার মাসয়ালাগুলোও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ইলমে গায়েবের মাসয়ালা সঠিকভাবে বুঝতে হলে, আগে এ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং সেগুলোর উত্তর পরিষ্কারভাবে জানতে হবে। যেমন-
ইলমে গায়েব
১। এলেম বা জ্ঞান কতো প্রকার ও কী কী এবং সেসবের সংজ্ঞাইবা কী?
২। ইন্দ্রিয় কাকে বলে এবং কতো প্রকার ও কী কী?
৩। নাবা, নবুয়ত ও নবী শব্দের অর্থ ও মর্ম কী কী?
৪। ইলমে গায়েবের ভান্ডারগুলো কী কী?
৫। “আলিমুল গায়েব” এর অর্থ কী এবং আল্লাহুতা’লা ছাড়া আর কেউ আলিমুল গায়েব কিনা?
৬। মহান আল্লাহপাক মহানবীকে ইলমে গায়েব দান করেছেন কিনা এবং করে থাকলে, কতোটুকু ও কিভাবে?
দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, অধিকাংশ আলেমেরই এসব ব্যাপারে স্পষ্ট, সঠিক ও সন্তোষজনক ধারণা নেই। ফলে, সুন্নী ও ওয়াহাবীদের মাঝে দূরত্ব দিনে দিনে বাড়ছেই। তাই, আমি এ ব্যাপারে আলোকপাত করবো এবং আমার প্রতিপক্ষের প্রতি চ্যালেঞ্জ থাকবে – গঠনমূলক যুক্তি দিয়ে আমার বক্তব্যগুলো খন্ডন করার!
ইলমে গায়েব
প্রণেতা: অধ্যাপক আব্দুন নূর সালাফী
প্রকাশনী: তাওহীদ পাবলকিশেন্স
সূচীপত্র
বিষয়:
‘ইলমে গায়েব বলতে অদৃশ্য ও অবিদিত জ্ঞানকে বুঝায়
সাধু মহাজনগণকে কেন্দ্র করে নর পূজার সৃষ্টি
মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর অদৃশ্য বিদিত নন
অন্যান্য নবীগণও গায়েব জানতেন না
প্রমাণপঞ্জি উল্লেখ করে দাত ভাঙ্গা জবাব প্রদান
প্ৰথম ভ্রান্তি
ইলমে গায়েব
দ্বিতীয় ভ্ৰম
স্ব-কপোল কল্পিত মর্যাদা প্রদান
মুহাম্মাদ (ﷺ) কি সর্বক্ষমতা সম্পন্ন এবং যা ইচ্ছে তা করতে পারেন?
মুহাম্মাদ (ﷺ)- এর প্রতিটি বাক্য ও আচরণ আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত ওয়াহী
মুহাম্মাদ (ﷺ) কি সদা সর্বস্থানে উপস্থিত?
রসূল(ﷺ) কি সর্বস্থানে উপস্থিত?
মুহাম্মাদ (ﷺ) মানুষ নবী ছিলেন না নূর নবী ছিলেন?
রসূল (ﷺ) – এর জীবন দু’ভাগে বিভক্ত
প্রতিপক্ষের দলীল
প্রতিপক্ষের দলীলের জওয়াব
الله الرحمن الرحيم بسم
ইলমে গায়েব
“ইলমে গায়েব বলতে অদৃশ্য ও অবিদিত জ্ঞানকে বুঝায়
‘ইলমে গায়েবকে কেন্দ্র করে নানা প্রকার শির্কের এবং নানা প্রকার ভ্রান্ত ধারণার বুৎপত্তি হয়েছে। সমস্ত প্রাণী ও বস্তুর অবস্থা সম্যকভাবে জানেন যে সত্তা, তাঁর নাম আল্লাহ। বস্তুত আল্লাহ ব্যতীত গায়েব জানার কেউই নেই। ‘ইলমে গায়েব’ তওহীদের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর প্রতি ঈমান নিয়ে আসা ও বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেকটি মানুষের প্রতি অপরিহার্য। এজন্যেই নির্ভেজাল ও খাঁটি তাওহীদবাদী মুসলমানদের বিশ্বাস যে, নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে আল্লাহ ছাড়া কেউই অদৃশ্য জানার নেই। আমি, আপনি ও পৃথিবীর সমুদয় প্রাণী ও বস্তুর অবস্থা তিনি সম্যকভাবে অবগত। তিনি অধঃলোক ও উর্ধ্বলোকে অবস্থিত সকল প্রাণী, জীব ও বস্তুর বর্তমান, ভবিষ্যৎ ও অতীতকে একই সাথে জানেন। তিনি আকাশে, বাতাসে, খেচরে, ভুচরে, জলে ও স্থলে অবস্থিত প্রাণীকূলের মনের ভেদ ও অন্তরের পরিকল্পনা সদা জ্ঞাত। মোট কথা, ‘ইলমে গায়েব বলতে যা বুঝায় তাতে আল্লাহর কোনই শরীক নেই। আল্লাহ বলেন:
قُلْ لاَ يَعْلَمُ مَنْ فِى السّموتِ وَالْاَرْضِ الْغَيْبِ إِلا الله
“হে মুহাম্মাদ বল, আল্লাহ ব্যতীত নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের কেউই গায়েবের সম্পর্কে অবগত হতে পারে না।” (সূরা আন-নামল ৬৫)
ইলমে গায়েব
এ আয়াতের আলোকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে একমাত্র আল্লাহই গায়েব জানেন। তিনি ব্যতীত কোন নবী, অলী, পীর, বুযুর্গ, জীন-পরী ও ফেরেশতা গায়েবের তত্ত্বজ্ঞান রাখেন না এবং সৃষ্টজীবের কেউই গায়েব সম্পর্কে ওয়াকেফহাল নন। মূলতঃ একমাত্র আল্লাহই গায়েব সম্পর্কে অবগত।
আল্লাহ বলেন:
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ
“উপস্থিত অনুপস্থিত সকলের জান্তা তিনি।”