Parturient ut id tellus vulputatre ac ultrlices a part ouriesnt sapien dignissim partu rient a a inter drum vehicula. Ornare metus laoreet tincidunt eros rolem tristique pretium malada.
Cras rhoncus vivamus luctus platea arcu laoreet selm. Curae est condenectus sed hac a parturient vestibulum.
মানুষের জীবনের পরম স্বার্থকতা আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের মধ্যেই নিহিত। আল্লাহ্র ইবাদত-বন্দেগী, হুকুম-আহকাম পালন করে তাঁরই অনুমোদিত পথে জীবন যাপনের মাধ্যমেই তাঁর সন্তুষ্টি পাওয়া সম্ভব। আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন-
তরজমাঃ বলুন (হে হাবীব), যদি তোমরা আল্লাহ্র ভালবাসা চাও, তবে আমার অনুসরণ করো। তা হলে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের ভালবাসবেন আর তোমাদের পাপ মার্জনা করবেন, আল্লাহ্ তাজ্ঞআলা ক্ষমাশীল, দয়ালু। [সূরা আ-লে ইমরানঃ ৩১]
আল্লাহ্ তা’আলার পছন্দনীয় মানবজীবন রাসূলের আনুগত্য ও অনুসরণের মধ্যেই নিহিত। এক কথায় আল্লাহর রাসূলের জীবনাচরঢকে অনুসরণ করলেই আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের উপর খুশী হবেন। প্রিয় নবীর জীবনচলায় উম্মতের অনুসরণ যোগ্য সকল বিষয়কেই সুন্নাত বলা হয়।
‘সুন্নাত’র পরিচিতি
‘সুন্নাত’ (سُنَّةٌ) – এর শাব্দিক অর্থ তরীক্বা, কার্যপ্রণালী, জীবনাচার, প্রক্রিয়া, পদ্ধতি ইত্যাদি। এর বহুবচন سُنَةٌ (সুনানুন). যেমন ক্বোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে, قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِکُمْ سُنَنٌ তোমাদের আগে অতীত হয়েছে অনেক ধরনের জীবনাচরণ)[সূরা আলে এমরান, আয়াত-১৩৭]
তরজমাঃ আপনার পূর্বে আমি যত রাসুল প্রেরণ করেছি, সবার ক্ষেত্রে এরূপ নিয়ম- প্রক্রিয়া চালু ছিলো। আপনি আমার নিয়মে ব্যতিক্রম পাবেন না।[সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত- ৭৭]
শরীয়তের পরিভাষায় রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র কথা, কাজ, সম্মতি, যা উম্মতের জন্য অনুসরণযোগ্য সেটাই সুন্নাত।
অর্থাৎ ‘‘সুন্নাত বলা হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের বাণী, কাজ ও নীরব সম্মতিকে। সাহাবায়ে কেরামের কথা এবং কাজকেও এ অর্থে প্রযোজ্য।’’ [নুরুল আনোয়ার কৃত মোল্লা জীবন রাহমাতুল্লাহি আলায়হি, ওফাত- ১১৩০ হিজরি, মিরক্বাত, কৃত- মোল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি]
হাদীসের সংজ্ঞা এবং পরিভাষাও অনুরূপ। এ জন্য সব সুন্নাতই হাদীস; কিন্তু সব হাদীসকে সুন্নাত বলা হয় না।
এ প্রসঙ্গে মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন-
سنت سے مراد حضور صلی اللہ علیہ وسلم کے سارے فرمان اور وہ افعال اور احوال ہیں جو مسلمانوں کے لئے قابل عمل ہیں
অর্থাৎ-সুন্নাত বলতে বুঝায়- হুযূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসালামঞ্চর সকল বাণী এবং ওই সমস্ত কাজ ও অবস্থাকে, যা মুসলমানদের ক্ষেত্রে আমলের উপযোগী। [মিরআত শরহে মিশকাত, অধ্যায়- কিতাব ও সুন্নাতকে মজবুত করে ধারণ করা।]
প্রিয় নবীর জীবনের ওই সব বিষয়, যেগুলো একান্তই তাঁর বিশেষত্ব বলে সাব্যস্ত, কিন্তু উম্মতের বেলায় তা প্রযোজ্য নয়, তা হাদীস; সুন্নাত নয়. যেমন ‘সওমে বেসাল’ (ইফতারবিহীন একটানা রোযা রাখা), চারের অধিক স্ত্রী গ্রহণের বিষয় ইত্যাদি। এগুলো নবীর জন্য খাস, তবে উম্মতের আমলের উপযোগী নয়। নবীর জন্য বিশেষিত আমল ছাড়া বাকী সব সুন্নাত; উম্মতের জন্য উভয় জগতের পাথেয় স্বরূপ।
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
অধ্যাপক আব্দুর নূর সালাফী (রহঃ)
প্রকাশনায়
তাওহীদ পাবলিকেশন্স
ঢাকা-বাংলাদেশ
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
প্রথম সংস্করণের ভূমিকা
সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রক্ষণাবেক্ষণকারী, আহারদাতা, ত্রাণকর্তা হলেন আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন। এ সকল গুণ একমাত্র তিনি ছাড়া আর কারো মধ্যে নেই। আর এ সমস্ত কথাসই ঘোষিত হয়, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ‘ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, এই কালেমার মাধ্যমে। এই কালেমাকে অন্তরে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ না করে এবং মুখে ঘোষণা না করে কেউ মুসলমান হতে পারে না । মুসলমান হওয়ার জন্য এক নম্বর শর্ত হচ্ছে, এই কালেমার প্রতি বিশ্বাস তথা আল্লাহ তা’আলার উপরোক্ত গুণাবলীতে বিশ্বাস করা এবং তিনি ছাড়া অন্য কাউকে এসব গুণের অধিকারী মনে না করা। কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাব, বিভ্রান্তি এবং মুশরিকী আকীদার প্রভাবে মুসলিম সমাজে শরীয়তের নামে এমনই সব কার্যকলাপ চালু হয়ে গেছে যা কালেমা ও ঈমানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রসূলুল্লাহ (স)-এর নির্দেশিত ও প্রদর্শিত পথ ও পন্থাই হল সুন্নাত। এর বিপরীত হল বিদ’আত। জনপ্রিয় লেখকের এ সুন্নাত বনাম বিদ’আত বইটিতে সমাজে প্রচলিত অনেক বিদ’আতের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা
‘সুন্নাত বনাম বিদ’আত’-এর লেখক শায়খ অধ্যাপক আঃ নূর সালাফী কয়েক বছর আগে ইন্তিকাল করেছেন। (আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুন।) বিদ’আত কবলিত এ সমাজের সংশোধনের জন্য তাঁর এ মূল্যবান সুন্নাত বনাম বিদ’আত বইটি অতীব প্রয়োজনীয় বিবেচিত হওয়ায় আমরা এটি আবার প্রকাশ করার উদ্যোগ নিলাম। আমাদের প্রকাশিত সকল বই-এর মত এ সুন্নাত বনাম বিদ’আত বইটি প্রকাশের একমাত্র উদ্দেশ্য হল প্রতিটি মুসলমান যেন আল্লাহ্র রসূল (সা)-এর রেখে যাওয়া কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর ‘আমল করে দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্যমণ্ডিত হতে পারে। আল্লাহ তুমি আমাদের এ শ্রমকে কবুল কর এবং আমীন সংশ্লিষ্ট সকলকে জাযায়ে খাইর দান কর।
অধ্যাপক মোঃ মোজাম্মেল হক
প্রধান উপদেষ্টা
তাওহীদ প্রেস এণ্ড পাবলিকেশন্স
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
সূচিপত্র
সুন্নাত ও বিদ’আত
জাতীয় জীবনে রসূল (স)-এর সুন্নাত
রাজনৈতিক জীবনে মুহাম্মাদ (স)-এর অনুসরণ করাও অপরিহার্য
নেতার নির্দেশ কেবলমাত্র ন্যায় সঙ্গত কাজে মানতে হবে
অনুসরণের নামে তাকলীদ, তরীকার সবক, ওরস ও হৈ হুল্লোড়ের মাধ্যমে যিকর করার বিদ‘আত
ইসলামে ১০ই মুহাররমের গুরুত্ব ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য প্রচলিত আশুরা
প্রচলিত শোক প্রথা বিদআত
মার্সিয়া
তাযিয়া
শবে বরাতের ঐতিহাসিক পটভূমি
শবে বরাত বা নিসফে শাবানের ফযীলত সংক্রান্ত হাদীস
মুসলমানদের আনন্দের দিন দু’টো
শবে বরাতকে কেন্দ্র করে বিদ’আত ও কবর পরস্তীর ধুমধাম দলীয় ইজমা, ইজতিহাদ ও কিয়াস কি বিদ’আত??
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
সুন্নাত ও বিদ’আত
মহান আল্লাহ মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (স.)-এর কাছে দু’টো জিনিস অহী স্বরূপ অবতীর্ণ করেন। প্রথমটি ওহী মাতলূ— আল কুরআন, দ্বিতীয়টি ওহী গাইর মাতলূ— আস সুন্নাহ নামে পরিচিত। রসূলের সুন্নাত তথা হাদীস ছাড়া কুরআন মজীদের বিধি বিধান অনুযায়ী চলা অসম্ভব। কেননা, কুরআন মজীদের বাস্তবায়ন হচ্ছেন মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (স) অর্থাৎ কুরআনের নির্দেশাবলীকে তিনি বাস্তবায়িত করেছেন। সুতরাং কুরআনী জীবন বিধানকে কার্যকরী করতে হলে মুহাম্মদী জীবনের অনুসরণ ছাড়া গত্যন্তর নেই। অন্য কথায় সুন্নাত ছাড়া ইসলামী জীবন যাপন করা সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব। রসূলের সুন্নাত হচ্ছে কুরআন মজীদের পরিপূরক। সুতরাং সুন্নাতের অনুসরণ অপরিহার্য। সুন্নাতের বিপরীত শব্দ হচ্ছে বিদ’আত । সুন্নাত ও বিদ’আতকে অনুধাবন করতে পারলে ইসলামী জীবন ব্যবস্থাকে সম্যকভাবে অনুধাবন করা সম্ভবপর হবে। এ দু’টোর আলোকে বর্তমান বিশ্বে মুসলিমদের আকীদা, আমল ও আখলাক যাচাই ও বাছাই করা সম্ভবপর হবে।
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
বর্তমানে মুসলিম সমাজে বহু সুন্নাত পরিত্যক্ত হয়েছে ও বহু বিদ’আত সুন্নাতের মতই বা তদুর্ধ্বে স্থান লাভ করে শক্তভাবে শিকড় গেড়ে শাখায় প্রশাখায় বিস্তৃত হয়ে মুসলিম সমাজকে কলঙ্কিত করছে। অথচ সুন্নাত অপরিহার্যরূপে অনুসরণীয় আর বিদ’আত অবশ্যই বর্জনীয়।
ইসলামের পরিভাষায় সুন্নাত বলতে কুরআনী জীবন বিধানের বাস্ত বায়নে মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (স)-এর পরিগৃহীত প্রথা ও মত, রীতি ও নীতিকে বুঝাচ্ছে । নবুওতী জীবনের ২৩ বছরে তিনি যে সকল বিধি নিষেধ জারী করেছেন, যে নিয়ম পদ্ধতি নিজে তিনি অনুসরণ করেছেন এবং কোন শরয়ী ব্যাপারে অন্যদের কাজে মৌনতা অবলম্বন করেছেন সেটিই সুন্নাত নামে আখ্যায়িত।
সুন্নাতের ব্যাখ্যায় বহু জনে বহু কথা বলেছেন । পুস্তকের কলেবর বৃদ্ধি হবার আশঙ্কায় এখানে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করছি ।
‘গুনিয়াতুত তালেবীন’ গ্রন্থে শাইখ আবদুল কাদের জিলানী (র:) বলেন ঃ
اَلسُّنَّةُ مَا سَنَّهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالْجَمَاعَةُ مَا اتَّفَقَ عَلَيْهِ أَصْحَابُ عَلَيْهِ أَصْحَابُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
রসূলুল্লাহ (স) যা প্রবর্তন করেছেন তাই সুন্নাত, আর সাহাবাগণ যে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তাই ইজমা ৷
আল্লামা রাগেব ইস্ফাহানী বলেন :
وسنة النبي طريقته التي كان يتنحراها
নবীর সুন্নাত হচ্ছে ঐ পদ্ধতি বাস্তব কর্মজীবনে তিনি যার অনুসরণ করে চলতেন। তাহলে, রসূল (স) তাঁর বাস্তব কর্মজীবনে যে নিয়ম পদ্ধতি প্রবর্তন করেছেন এবং যার ওপর আমল করেছেন সেটিই সুন্নাত ।
নবীর পরিগৃহীত নীতি অনুযায়ী চলার জন্য মুসলিম জনগণ আদিষ্ট হয়েছেন। তাঁর অনুসরণ করাকে আল্লাহ আমাদের ওপর অবশ্য প্রতিপাল্য
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
করেছেন। তাতে কোন প্রকারের বেশ-কম করাকে নিষিদ্ধ করেছেন । তিনি যে কাজের অনুমতি দেননি, ধর্মের নামে সে কাজের সম্পাদনই হচ্ছে বিদ’আত। সে কাজের অবিস্কারক বড় শাসক, ইমাম ও তথাকথিত যে কোন আউলিয়া আল্লাহ হোক না কেন তাতে কোন কিছু আসে যায় না এবং সে কাজ হারামাইন শরীফাইনে সম্পাদিত হতে থাকলেও ত বিদ‘আতরূপেই বিবেচিত হবে। আল্লাহ বলেন :
‘আর (হে মুসলিম সমাজ! তোমাদের কর্মজীবনে চলার জন্য) রসূল যে ব্যবস্থা প্রদান করেন তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর এবং যে কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন তা থেকে বিরত থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করে চল (এই বিধানের বিপরীত কাজ করবে না, করলে তিনি তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন, কেননা) অবশ্যই তিনি কঠিন শাস্তিদাতা’ । (সূরা হাশর ৫৯: ৭)
আলোচ্য আয়াতের সারমর্ম নিম্নরূপ ঃ
মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (রা.)-এর দেয়া জীবন বিধান সুন্নাতকে মুসলিম জীবনের সর্বস্তরে মেনে চল আর তাঁর নিষিদ্ধ পদ্ধতিগুলোকে পরিহার কর, তার পরিগৃহীত নিয়ম পদ্ধতির বিরোধিতা কর না। যদি কোন মুসলিম তার জীবনের কোন স্তরে আঁ হযরতের সুন্নাতের বিরোধিতা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে কঠিন শাস্তি প্রদান করবেন।
রসূলের সুন্নাতে নেই এবং সাহাবাগণের ইজমাতেও যার সমর্থন নেই সেই আচরণ ও অনুষ্ঠানকে ইবাদতের নামে প্রচলন ঘটিয়ে দেয়া হলে সেটা বিদ’আতরূপে আখ্যায়িত হবে। ইবাদতের নামে নতুন কোন পন্থা ও পদ্ধতি অবলম্বন করে সওয়াবের উদ্দেশ্যে আমল করার নামই হচ্ছে বিদ’আত । সৎ উদ্দেশ্যকে সম্মুখে রেখেই বিদ’আত কার্যের সূচনা হয়। ভ্রান্ত জাতি খ্রিস্টানদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
আল্লাহর সন্তোষ লাভের কারণে বৈরাগ্য নীতিকে তারা নিজেরাই সেচ্ছায় আবিস্কার করে নিয়েছিল, আমি কিন্তু তাদের ওপর এ নীতিকে বিধিবদ্ধ করে দেইনি’ (সূরা আল-হাদীদ ৫৭: ২৭)।
প্রকৃত ও স্বভাব ধর্ম হচ্ছে ঃ ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে আল্লাহর বিধানকে কার্যকরী করা। বনে, জঙ্গলে, মাঠে ও খানকায় বসে আল্লাহর বিধানকে সামগ্রিকভাবে কার্যকর করা মোটেই সম্ভবপর নয় । এ কারণেই আল্লাহ খ্রিস্টানদেরকে বৈরাগ্য পালনের আদেশ দেননি। তারা যে পথ অবলম্বন করেছিল পরিশেষে তারা এর মর্যাদা রক্ষা করতে পারেনি। স্বল্প দিনের মধ্যেই তা ধর্মের নামে একটা জঘন্য অনাচারে পরিণত হয়েছিল। কারণ সে ব্যাপারটাই ছিল প্রকৃতি-বিরুদ্ধ কাজ। তাদের দেখাদেখি মুসলিম সমাজে ঐ বৈরাগ্যবাদের মতোই ছুফী মতবাদের উদ্ভব ঘটেছে। ছুফী মতবাদের ছদ্মবেশে এরা অভিনব পন্থায় যিকরের নামে খানকায় ও কবরস্থানে বসে বহু অভিনব বিদ’আতের আবিষ্কার করে মুসলিম সমাজে তার প্রচলন ঘটাতে থাকেন। বর্তমানে মুসলিম সমাজে একদিকে সুন্নাত অপরদিকে বিদ’আত বিরাজ করছে। এক্ষণে সুন্নাতকে বিদ’আত থেকে বাছাই করে নিয়ে চলার জন্য প্রথমে উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ বিধান জারী করেছেন, সে বিধানটি সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য। মুসলিম জনগণ যে নবীর সুন্নাতের অনুসরণ করে থাকেন, সেই নবীও তাঁর স্বেচ্ছা প্রণোদিত কোন নীতির অনুসরণ করার জন্য আদিষ্ট হননি। আল্লাহর আদেশের সামান্যতম পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করার তাঁর কোনও ক্ষমতা ছিল না। আল্লাহ রসূলুল্লাহ (সা (সাপাহার)-কে এ কথা ঘোষণা করতে বলেন :
আর যে কেউই আর রসূলের অনুগত্য করল, সে তো আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিল, তোমাকে (হে রসূল) তাদের তত্ত্বাবধায়করূপে প্রেরণ করিনি।” (সূরা আন-নিসা ৪: ৮০)
সূরা নিসার এই আয়াতে রাব্বুল আলামীন রসূল (স)-এর আনুগত্য করণকে তাঁর নিজের আনুগত্যকরণ বলে ঘোষণা করেছেন।
মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (স) বিশ্ব নাবী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেবল নির্ধারিত একটি দলের আদর্শ । যারা তাঁকে আদর্শ নাবী হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, তাদের উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেন:
“তোমাদের মধ্যে যে সকল মানুষ আল্লাহতে ও পরকালে আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিকতর স্মরণ করে তাদের জন্য রসূলুল্লাহ (সা)-এর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।” (সূরা আহযাব ৩৩: ২১)
উল্লেখিত আয়াত কয়টির সারমর্ম হচ্ছে :
(ক) মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (স:) আল্লাহ কর্তৃক অহীর অনুসরণ করেন।
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
(খ) দীনী কার্যে স্বকপোল কল্পিত কোন বক্তব্য তিনি কখনও পেশ করেননি ।
(গ) সকল মুসলমান মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাপাহার)-এর সুন্নাতের অনুসরণের জন্য আদিষ্ট।
(ঘ) যারা কেবলমাত্র আল্লাহ ও পরকালে আশা রাখে এবং ভয় করে রসূলুল্লাহ (স.) তাদের জন্য আদর্শ ।
‘আর যে কেউই রসূলুল্লাহ (স) (সুন্নাতের) আনুগত্য করবে সেই বিরাটভাবে সফলকাম হবে’ । (সূরা আহযাব ৩৩: ৭১)
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রসূল (সা)-এর সুন্নাতের অনুসরণ করাকেই সফলকাম হবার মাপকাঠি নির্ধারণ করেছেন। ফলে মুহাম্মদী জীবনের অনুসরণ সকল মুসলমানের জন্য অপরিহার্য ।
রসূল (স)-এর সহচরবৃন্দ তাঁর জীবদ্দশায় ও পরবর্তীকালে কিভাবে রসূল (স)-এর সুন্নাতকে তাদের জাতীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক জীবনে বাস্তবে রূপ দান করেছেন, নিম্নে উদাহরণসহ তার কয়েকটা দিক আলোচনা প্রসঙ্গে ইত্তেবায়ে সুন্নাত ও বিদ’আত বর্জনের রূপরেখা মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ ।
সুন্নাত বনাম বিদ’আত
Reviews (0)
Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “সুন্নাত বনাম বিদ’আত” Cancel reply
Reviews
There are no reviews yet.