Parturient ut id tellus vulputatre ac ultrlices a part ouriesnt sapien dignissim partu rient a a inter drum vehicula. Ornare metus laoreet tincidunt eros rolem tristique pretium malada.
Cras rhoncus vivamus luctus platea arcu laoreet selm. Curae est condenectus sed hac a parturient vestibulum.
লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইযী আল মাদানী
প্রকাশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স
রাসুল (সা.)-এর জন্য ভালোবাসা ঈমানের অংশ। হাদিসের ভাষ্য মতে, যে ব্যক্তি নিজের জীবনের চেয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে ভালোবাসে না সে প্রকৃত মুমিন নয়। নবীপ্রেমের অনন্য নিদর্শন ছিলেন সাহাবায়ে কিরাম, যাঁরা তাঁদের জীবন, সম্পদ ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই প্রেমের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ইসলামী স্কলাররা ভালোবাসাকে চার প্রকারে ভাগ করেন। তা হলো—ক. আবশ্যিক ভালোবাসা, খ. হারাম ভালোবাসা, গ. প্রশংসনীয় ভালোবাসা, ঘ. নিন্দনীয় ভালোবাসা।
ক. আবশ্যিক ভালোবাসা : যে ভালোবাসা ঈমানের অংশ ও দাবি, তাকে আবশ্যিক ভালোবাসা বলা হয়। তা চার প্রকার—
১. আল্লাহর জন্য ভালোবাসা : ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা ঈমানদার আল্লাহর প্রতি তাদের ভালোবাসা অনেক বেশি।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৫)
দাউদ (আ.) প্রার্থনা করতেন, ‘হে আল্লাহ! আপনার এবং যারা আপনাকে ভালোবাসে তাদের ভালোবাসা কামনা করছি।’
২. রাসুল (সা.)-এর জন্য ভালোবাসা : আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘বলুন! যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ করো। তবে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মার্জনা করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)।
৩. নবী পরিবারের প্রতি ভালোবাসা : মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কারো হৃদয়ে ঈমান প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না তাদের (নবী পরিবারকে) আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসবে।’
৪. ভালো মানুষের প্রতি ভালোবাসা : আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন জিবরাঈল (আ.)-কে ডেকে বলেন, ‘আমি দুনিয়ার অমুক বান্দাকে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিবরাঈল (আ.) তাকে ভালোবাসেন এবং আকাশের অন্যান্য ফেরেশতাকে ডেকে বলেন, দুনিয়ার অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালোবাসেন, আমিও ভালোবাসি, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তারপর সব ফেরেশতা তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। ফলে পৃথিবীতে লোকটি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিতে পরিগণিত হয়।’ (সহিহ বুখারী)
খ. হারাম ভালোবাসা : অন্যায় ও অনৈতিক ভালোবাসা। বিভিন্ন মূর্তি ও ভাস্কর্যের প্রতি ভালোবাসা। মুমিনদের জন্য এমন ভালোবাসা হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে যারা আল্লাহকে ছাড়া অন্যকে অংশীদার সাব্যস্ত করে তারা অংশীদারদের আল্লাহর মতো ভালোবাসে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৫)
গ. প্রশংসনীয় ভালোবাসা : তা হলো, মানুষের প্রতি স্বভাবগত ভালোবাসা, সম্মানী ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসা, আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা, ভালো কাজের প্রতি ভালোবাসা।
ঘ. নিন্দনীয় ভালোবাসা : এমন ভালোবাসা, যা ব্যক্তিকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয় তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা : মুনাফিকুন, আয়াত : ৯)
সাহাবায়ে কিরামের নবীপ্রেম
মহানবী (সা.)-এর প্রতি সাহাবায়ে কিরামের ভালোবাসা ছিল সুগভীর। এতে ছিল না কোনো কৃত্রিমতা, লৌকিকতা ও পার্থিব উদ্দেশ্য, বরং তা ছিল হৃদয়ের খাঁটি আকর্ষণ। হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় মক্কা থেকে উরওয়া ইবন মাসউদ মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে কথা বলতে আসেন। মহানবী (সা.)-এর প্রতি সাহাবিদের ভালোবাসা দেখার পর মক্কায় গিয়ে মন্তব্য করেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি কায়সার, কিসরা এবং নাজ্জাশির মতো সম্রাটদের কাছে গিয়েছি। আল্লাহর শপথ! আমি কোনো বাদশাহকে তার সঙ্গীদের কাছ থেকে এতো মর্যাদা লাভ করতে দেখিনি, যতটা সম্মান ও মর্যাদা মুহাম্মদ (সা.)-কে লাভ করতে দেখেছি। আল্লাহর শপথ! তিনি যখন থুতু ফেলেন, সেই থুতু কেউ না কেউ হাত বাড়িয়ে নিয়ে নেয় এবং দেহে-মুখে মাখে। তিনি কোনো আদেশ করলে সেই আদেশ পালনে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তিনি অজু করতে শুরু করলে পরিত্যক্ত পানি গ্রহণে সঙ্গীদের মধ্যে হুড়াহুড়ি লেগে যায়। তিনি কথা বলতে শুরু করলে তাঁর সঙ্গীরা কণ্ঠস্বর নিচু করে ফেলে। শ্রদ্ধার কারণে সঙ্গীরা তাঁর প্রতি পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় না।’ (আর রাহীকুল মাখতুম)
মহানবীর জন্য সাহাবিদের আত্মত্যাগ
তৃতীয় হিজরিতে সংঘটিত ওহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। একপর্যায়ে মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে মাত্র সাতজন সাহাবি ছিলেন। যুদ্ধ করতে করতে ছয়জনই আহত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন। ফলে তাঁর সঙ্গে থাকেন মাত্র একজন। তিনি হলেন তালহা ইবন ওবায়দুল্লাহ (রা.)। তিনি ঢাল হয়ে মহানবী (সা.)-কে রক্ষা করেন। তাঁর শরীরে তীর ও তরবারির ৮০টিরও বেশি আঘাত লেগেছিল। (জাদুল মাআদ : ২/৯৫)
রাসুলের দরবারে সাহাবায়ে কিরাম
প্রিয় নবী (সা.)-এর আহ্বান তাদের কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ, তা সিরাতের কিতাবগুলোতে তাকালেই বোঝা যায়। মহানবী (সা.) কোনো কথা বললে সাহাবায়ে কিরাম সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। তিনি কোনো কিছু জানতে চাইলে তাঁরা বিনয় প্রকাশ করে বলতেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই অধিক অবগত। মহানবী (সা.)-এর কোনো কিছুতে কষ্ট হওয়া তাঁদের কাছে নিজের আপনজনের কষ্টের চেয়ে বেশি কষ্ট লাগত। খুবাইব (রা.) বন্দি হওয়ার পর কাফিররা তাঁর দেহের অঙ্গগুলো যখন একের পর এক বিচ্ছিন্ন করতে থাকে তখন তারা বলে, তুমি কি চাও তোমাকে ছেড়ে দিয়ে তোমার পরিবর্তে তোমার নবী মুহাম্মদকে হত্যা করি? খুবাইব (রা.) এই করুণ অবস্থায়ও বলেন, ‘আল্লাহর শপথ! আমি মুক্তি পেয়ে আমার পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাব আর আমার নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর গায়ে কাঁটার আচড় লাগবে, তা হতে পারে না।’ ওহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর করুণ দশা শুনে একজন বৃদ্ধা ওহুদ ময়দানের দিকে রওনা হন। তাঁর অনেক আপনজন যুদ্ধে এসেছিল। তিনি পথিমধ্যে শুনতে পান তাঁর পুত্র, স্বামী, ভাই যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। বৃদ্ধা আল্লাহর প্রশংসা করলেন। পরিশেষে মহানবী (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার পুত্র, স্বামী, ভাই শহীদ হয়েছে, এতে আমার কোনো দুঃখ নেই, আপনি বেঁচে আছেন, তাতেই আমি খুশি।’
মহানবী (সা.)-এর হিজরতের আগে আলী (রা.)-কে নিজের বিছানায় শুয়ে থাকতে বলেন। অথচ এটি ছিল বাঁচা-মরার প্রশ্ন। কিন্তু রাসুলের ভালোবাসায় বিনাবাক্যে তা মেনে নেন। আবু বকর সিদ্দিক (রা)-কে যেদিন মহানবী (সা.) হিজরতের কথা বলেছেন, সেদিন থেকে হিজরতের রাত পর্যন্ত (প্রায় তিন মাস) বিছানায় পিঠ লাগাননি। কারণ রাসুল (সা.) কখন ডাক দেন, তাঁর উঠতে দেরি হয়ে যায় কি না।
মহানবী (সা.)-কে সাহাবায়ে কিরাম ছায়ার মতো অনুসরণ করতেন। তিনি যেভাবে কথা বলতেন, তাঁরা সেভাবে কথা বলতেন, তিনি যা খেতেন, তাঁরাও তা খেতেন। তিনি যেভাবে পোশাক পরতেন, তাঁরাও সেভাবে পোশাক পরতেন। তবে যেসব আমল ও কাজ রাসুল (সা.)-এর জন্য বিশেষায়িত ছিল, তা থেকে তাঁরা বিরত থাকতেন।
পিতা-মাতার চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন প্রিয় নবীকে
আবু সুফিয়ান (রা.) মুসলিম হওয়ার আগে মহানবী (সা.)-এর ঘরে আগমন করলে তাঁর মেয়ে উম্মুল মুমিনিন উম্মে হাবিবা (রা.) তাঁকে মহানবী (সা.)-এর বিছানায় বসতে দেননি।
সাহাবায়ে কিরাম
Reviews (0)
Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “সাহাবায়ে কিরাম” Cancel reply
Reviews
There are no reviews yet.