সালাসাতুল উসুল
বই: আল্লামাহ ইবনু উসাইমীনের যুগান্তকারী ব্যাখ্যায় সালাসাতুল উসূল (তাখরীজ ও তাহকীক সহ)
মূল: আল ইমাম আল আল্লামাহ শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দিল ওয়াহাব (রহিমাহুল্লাহ)
ব্যাখ্যা: শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহিমাহুল্লাহ)
শ্ৰুত লিখন: শায়খ ফাহাদ বিন নাসির বিন ইবরাহীম আস-সুলাইমান (রহিমাহুল্লাহ)
অনুবাদ: আবূ হাযম সাকিব চৌধুরী ও আবূ নাবীহা নাজমুস সাকিব
সম্পাদনা: আবূ হাযম সাকিব চৌধুরী
প্রকাশনী: তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয়: ইসলামি বিধি-বিধান ও মাসআলা-মাসায়েল
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৪১১
কাভার: হার্ডকভার
বইটি কিনতে কিল্ক করুন: আল্লামাহ ইবনু উসাইমীনের যুগান্তকারী ব্যাখ্যায় সালাসাতুল উসূল
আরো জানতে কিল্ক করুন: তাওহীদ পাবলকিশেন্স
শারহু
সালাসাতুল উসুল
[তিনটি মূলনীতির ব্যাখ্যা]
মূল
শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহিমাহুল্লাহ)
শ্ৰুত লিখন
শায়খ ফাহাদ বিন নাসির বিন ইবরাহীম আস-সুলাইমান (রহিমাহুল্লাহ)
অনুবাদ
আবূ হাযম সাকিব চৌধুরী
আবূ নাবীহা নাজমুস সাকিব
সম্পাদনা
আবূ হাযম সাকিব চৌধুরী
সালাসাতুল উসুল
বাংলায় আরবী উচ্চারণ পদ্ধতি
বাংলা ভাষায় আরবী হরফগুলো মাখরাজসহ বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করা অত্যন্ত দুরূহ। আরবীকে বাংলায় উচ্চারণ করতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিকৃত করা হয়েছে, যা আরবী ভাষার জন্য অতিমাত্রায় দূষণীয়। কেননা, অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণ বিকৃতির কারণে অর্থগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে যায়।
আরবী হরফগুলোর বাংলা উচ্চারণ বিশুদ্ধভাবে করার প্রচেষ্টা নানাভাবে করা হয়েছে। কিন্তু আরবী ২৮টি বর্ণমালার প্রতিবর্ণ এ পর্যন্ত কেউ-ই পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহার করেন নি। আলহামদুলিল্লাহ! সম্ভবত আমরাই সর্বপ্রথম ২৮টি বর্ণমালাকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হলাম। একটু চেষ্টা ও খেয়াল করলেই স্বল্পশিক্ষিত পাঠক-পাঠিকাও এ উচ্চারণ রীতিমালা আয়ত্ব করে মোটামুটি শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে পারবেন বলেই আমাদের একান্ত বিশ্বাস ।
আইন অক্ষরের পরে ইয়া সাকিন হলে সেক্ষেত্র ঈ লিখা হবে। ফাতহাহ বা যাবারের বাম পাশে ইয়া সাকিন হলে ‘য়’ ব্যবহৃত হবে। যেমন লায়স্থ ভয়। ওয়াও এর উচ্চারণ ব এর মতো হলে সেক্ষেত্রে উক্ত ব এর উপর বিন্দু অর্থাৎ ব হবে। ফাতহাহ বা যাবারের বাম পাশে হামযাহতে যের হলে সেক্ষেত্রে য়ি ব্যবহৃত হবে। আইন (৫) অক্ষরে সাকিন হলে সেক্ষেত্রে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন (~~~~) আ’মাশ। হামযাহ সাকিনের ক্ষেত্রে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন (ং) মু’মিন। অনুরূপভাবে শেষাক্ষরে হামযাহ থাকলেও ওয়াকফের কারণে (‘) ব্যবহার করা হয়েছে। খাড়া যাবার বা মাদ্দে আসলির ক্ষেত্রে (1) এর উপরে খাড়া যাবার-ই ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে আমরা অত্র সালাসাতুল উসুল গ্রন্থে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ বানান পদ্ধতি ব্যবহার করেছি পাঠকদের অভ্যস্থ হওয়ার জন্য। আশা করছি ধীরে ধীরে সুপ্রিয় পাঠক এটি আত্মস্থ করতে সক্ষম হবেন ইনশা আল্লাহ ।
সালাসাতুল উসুল
প্রকাশকের পক্ষ থেকে দু’ কলম
যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক। সলাত (দরুদ) ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (সালমা লাই এর প্রতি। অতঃপর: এ গ্রন্থের মাধ্যমেই তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর নতুন সিরিজ গ্রন্থ প্রকাশের যাত্রা শুরু হলো। এ সিরিজের নামকরণ করা হয়েছে “আলোকধারা”।
বক্ষমান সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটি সম্পর্কে অনুবাদকের কথাতেই পূর্ণ ধারণা পাঠকবৃন্দ পেয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ। এরূপ বিদগ্ধ বিদ্বানের গ্রন্থ প্রকাশ করতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি, ফালিল্লাহিল হামদ। যদিও ইতিপূর্বে তাওহীদ পাবলিকেশন্স থেকে বহু গ্রন্থের অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তথাপি এ সালাসাতুল উসুল গ্রন্থের সম্পাদক আৰু হাযম মুহাম্মাদ সাকিব চৌধুরী হাফিযাহুল্লাহর সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার পর অন্যমাত্রার উপলব্ধি অনুভূত হয়েছে। যিনি এ সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটিকে পাঠক বরাবর প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপনে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টাস্বরূপ অকৃপণভাবে তাঁর সময়, শ্রম ও মেধা বিলিয়ে দিয়েছেন। সর্বোপরি বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও মুহাদ্দিস্ন শায়খ ড. সুহাইব হাসান বিন আবদুল গাফফার হাসান (পাকিস্তান, হাফিযাহুল্লাহ এ গ্রন্থের তাহকীকাত অংশটিকে দীর্ঘ সময় ধরে পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষ নিরীক্ষণ করে তার তাযকিয়া প্রদান করে সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটির অলংকরণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটির প্রুফ রিডিং ও প্রচ্ছদ ডিজাইনের দায়িত্ব পালন করেছেন যথাক্রমে মাহিন আলম ও বিশিষ্ট ডিজাইনার শামসুদ্দোহা শাফায়েত। তজ্জন্য তাদের শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। জাযাহুমুল্লাহু আহসানাল জাযা।
তরুণ প্রজন্ম যে ধরনের অনুবাদ, সম্পাদনা, কাগজ, ছাপা, বাঁধাই ও প্রচ্ছদ কামনা করে, তার সবগুলোই এ সালাসাতুল উসুল গ্রন্থে পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে। আশাকরি কাগজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মানোন্নয়নে সামান্য কিছু মূল্যবৃদ্ধি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে গৃহিত হবে। শত চেষ্টা সত্ত্বেও মুদ্রণপ্রমাদ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। পাঠকবৃন্দ আমাদের অবগত করলে তা কৃতজ্ঞচিত্তে প্রাধান্য পাবে ইন শা আল্লাহ।
পাঠক সমীপে এ সালাসাতুল উসুল গ্রন্থের সামষ্টিক মূল্যায়ন আমাদের অবহিত করলে তা ভবিষ্যৎ পাথেয় হিসেবে পরিগণিত হবে ইন শা আল্লাহ।
পরিশেষে সালাসাতুল উসুল এ গ্রন্থের প্রকাশনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ও তাদের জন্য আল্লাহর সমীপে উত্তম জাযা কামনা করছি।
বিনীত
মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ
পরিচালক, তাওহীদ পাবলিকেশন্স
সালাসাতুল উসুল
অনুবাদকের নিবেদন
যাবতীয় প্রশংসা সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক আল্লাহ্র জন্য। সলাত (দরুদ) ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশেষ নাবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (স) এর প্রতি।
অতঃপর : মুসলিম নর-নারী মাত্রই অত্যাবশ্যক কর্তব্য তার মহান রব্ব আল্লাহ্, তার দ্বীন ইসলাম এবং তার নাবী মুহাম্মাদ (স) সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। কোন ব্যক্তি যত বড়ই জ্ঞানী হোক না কেন, ইসলামের এই তিনটি মৌলিক বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকলে এবং তদানুযায়ী আমল না করলে দুনিয়াবী জীবনে সে যেমন পথভ্রষ্ট হবে, তেমনি পরকালীন জীবনের প্রতিটি স্তরে সে লাঞ্ছিত-অপদস্ত হবে এবং চিরস্থায়ী জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব তাকে গ্রাস করবে।
‘সালাসাতুল উসুল’ বা “তিনটি মূলনীতি’ কিতাবটি অষ্টাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব [رحمه الله ] এর অনবদ্য একটি রচনা। সালাসাতুল উসুল মূল বইটি সংক্ষিপ্ত হলেও এর প্রতিটি কথার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অত্যন্ত ব্যাপক। অনেক আলিমে দ্বীন এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ রচনা করেছেন। তন্মধ্যে সুউদী আরবের প্রখ্যাত আলিম এবং জগদ্বিখ্যাত ফাকীহ শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল- উসাইমীন [رحمه الله]-এর ব্যাখ্যা গ্রন্থটি সর্বাধিক সমাদৃত। যে কোন মুসলিমের জন্য এটি অত্যাবশ্যক পাঠ্য।
বহুদিন যাবত পাঠক সমাজে এই সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটির একটি সহজপাঠ্য ও সাবলীল অনুবাদের প্রয়োজনীয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছিল। অবশেষে তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর আলোকধারার পরিচালক উসতায আবূ হাযম মুহাম্মাদ স্থাকিব চৌধুরী হাফিযাহুল্লাহ এর উৎসাহে অনুবাদের কাজে আত্মনিয়োগ করি এবং আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলার অশেষ মেহেরবানীতে অনুবাদের কাজ সমাপ্ত করি। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
অত্র সালাসাতুল উসুল গ্রন্থের কুরআনের অনুবাদগুলো অধ্যাপক মোহাম্মাদ মোজাম্মেল হক এর “তাফসীর তাইসীরুল কুরআন” থেকে গ্রহণ করা হয়েছে ।
অনুবাদ করার পর এটির সম্পাদনা ও তাহকীকের গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী উসতায আবূ হাযম মুহাম্মাদ স্মাকিব চৌধুরী হাফিযাহুল্লাহ ।
সালাসাতুল উসুল বইটির লেখক, ভাষ্যকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও প্রকাশকসহ সালাসাতুল উসুল বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ্ উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং পরকালে একে জান্নাত লাভের পাথেয় স্বরূপ করুন। আমীন!
আবূ নাবীহা নাজমুস সাকিব
সালাসাতুল উসুল
সম্পাদকের কলম থেকে
সকল প্রশংসা আল্লাহ্। তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। রিযক দিয়েছেন। এ বিস্ময়কর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আমাদের জানিয়েছেন কিভাবে এ ধরাধামে থাকাকালীন সময়ে কেবল তাঁরই ইবাদাত করতে হবে। শুকরিয়া আল্লাহ্র প্রতি। তাঁর দেওয়া অন্তর দিয়ে তার করুণাতেই আমরা হিদায়াতের বাণী বুঝতে সক্ষম হয়েছি। সালাত ও সালাম তাঁর প্রেরিত নবীর প্রতি। তাঁর নির্দেশিত পথেই আমরা সঠিক দিশা পেয়েছি।
আকীদাহ-মানহাজ তথা ইসলামের মূল বিশ্বাস নিয়ে অনেকেই যথেষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছেন। বিশেষ করে ইসলামের মূলে কুঠারাঘাতকারীদের ষড়যন্ত্রে যুগ যুগ ধরেই ভ্রান্তবাদীরা অপঃতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও তত্ত্ব সন্ত্রাসের আগ্রাসনে সঠিক ইসলামের পরিচালিত হতে চাওয়া ভাইবোনেরা দ্বিগভ্রান্ত হয়ে মূল পথ থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছেন।
আরবভূখণ্ডে ইসলামের মূল ধারা তথা আহলে হাদীস ধারার বইপত্র থেকে শুরু করে নানাপ্রকার ইসলামিক লেকচার সহজলভ্য হলেও নব্বইয়ের দশক অবধি বাংলা ভাষায় এগুলো ছিল অকল্পনীয় প্রত্যাশা। সূফীবাদ ও বিদআত অধ্যুষিত লোকেদের আধিক্যে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গেই মূলত: স্বল্প সংখ্যক কিছু আহলে হাদীসের বই পাওয়া যেত মাত্র। তথাপি প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে সালাফদের বিখ্যাতগ্রন্থগুলো ছিলইনা বলতে গেলে।
তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর ব্যবস্থাপনায় আলোকধারা’র ঝুলিতে এখন থেকে এই ধরণের বইগুলো একে একে অনূদিত হয়ে যুক্ত হতে থাকবে ইন শা’ আল্লাহ। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাওহীদ পাবলিকেশন্সের এই অনবদ্য অভিযাত্রার সাথে যুক্ত হতে পেরে আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আলহামদুলিল্লাহ্।
এছাড়া হাদীসে এসেছে:
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَشْكُرُ اللَّهَ مَنْ لَا يَشْكُرُ النَّاسَ
আবূ হুরাইরাহ (রা) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।— আবূ দাউদ ৪৮১১,
আল আলবানী এই হাদীস্বটিকে সাহীহ বলেছেন। এছাড়া যুবাইর আলীও তাঁর সাথে সহমত পোষণ করেছেন।
তাই এই মহতী উদ্যোগের পেছনে যাদের অবদান তাদের মধ্যে তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর ওয়ালীউল্লাহ ভাই ও তরুণ অনুবাদক নাজমুস সাকিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে এটিকে পাঠক সমাজে করকমলে তুলে দেয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
সালাসাতুল উসুল তাওহীদের আলোকবর্তিকা শায়খ মুহাম্মাদ বিন আবদিল ওয়াহহাবের একটি অনবদ্য গ্রন্থ। আরবের সকল প্রাথমিকস্তরের তালেবুল ইলমদের জন্য এই সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটি অপরিহার্য পাঠ্য হিসেবে সমাদৃত। আরবের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটিকে মুখস্থ করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। বক্ষমান গ্রন্থটি মূলত: সেই অসাধারণ গ্রন্থের শারই তথা ব্যাখ্যা। বিখ্যাত আলেম শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমীন [রা] এটির রচয়িতা।
সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটির সম্পাদনা করার দূরুহ দায়িত্বটি আমার উপর ন্যস্ত হয়। অনুবাদক নাজমুস স্নাকিবকে আমরা শুরু থেকেই অনুরোধ করে রেখেছিলাম যেন বাংলাদেশের স্কুল কলেজের তরুণ-তরুণীরা অনুবাদকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে। পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ভাই বোনেরাও এর থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ফায়দাহ গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া নবীণ আরবী ভাষা শিক্ষার্থীরাও এই সালাসাতুল উসুল গ্রন্থটির মূল অনুবাদকে সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে ইনশা আল্লাহ। কেননা, প্রতিটি শব্দকেই ধরে ধরে সরলভাবে ভাষান্তর করা হয়েছে।
শুধু তাই নয় সাধারণ পাঠকবৃন্দের নিকট ব্যাখ্যাকারের ব্যাখাটিকে সহজবোধ্য করার লক্ষ্যে পুরোটা বই জুড়ে শিরোনাম সংযোজন করা হয়েছে। আশা করছি এই শিরোনামগুলো বইটিকে সুখপাঠ্য করে তুলবে ইনশা আল্লাহ ।
এ সালাসাতুল উসুল বইটির অনুবাদক নাজমুস সাকিব ইংল্যান্ডের বার্মিংহামস্থ প্রকাশনী ‘আল হিদায়াহ’ কর্তৃক প্রকাশিত (১৯৯৭ ঈসায়ী) আবূ তালহাহ দাউদ ইবন রোনাল্ড বারব্যাংক রাহিমাহুল্লাহ কর্তৃক অনূদিত “Explanation of the Three Fundamental Principles” থেকে অনুবাদ করেছেন। কিন্তু একই সাথে তিনি আরবী মূল বই থেকে তাঁর সাধ্যানুযায়ী মিলিয়ে দেখেছেন।
আমার কাছে এ সালাসাতুল উসুল বইটির অনুবাদের পাণ্ডুলিপি আসার পর আমি মূল আরবী থেকে প্রতিটি লাইন চেক করেছি। একই সাথে বাংলা ও ইংরেজি তর্জমাতে ইসতিলাহী ও অনুবাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিসহ ছুটে যাওয়া লাইনসমূহ যোগ করে দিয়েছি। এরপর শ্রদ্ধেয় ওয়ালীউল্লাহ ভাইকে দেখিয়েছি। বহু বিনিদ্র রজনী তাঁর সাথে বসে আরবী থেকে প্রতিটি লাইন পড়ে অনুবাদ করে শুনিয়েছি ও শায়খ ইবনু উসাইমীনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছি। ওয়ালীউল্লাহ ভাই বেশ কিছু স্থানে বাংলার মনে রাখতে হবে, আমিও ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নই। তবুও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি নির্ভুল তাহকীক করার । কোন হাদীস বিশারদ প্রতিষ্ঠিত আলেমের দৃষ্টিতে কোন প্রকার বিভ্রাট লক্ষ করে আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করলে তা, সেক্ষেত্রে প্রকাশক বরাবর জানিয়ে দিলে তা কৃতজ্ঞতাসহ গ্রহণ করা হবে। আর তা পর্যালোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে, ইনশা আল্লাহ্।
সাধারণ পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটার আশংকায় তাহকীকাতের অংশটি বইয়ের শেষাংশে সংযোজন করা হয়েছে।
তাওহীদ পাবলিকেশন্স কর্তৃক প্রকাশিতব্য গ্রন্থগুলোতে আমরা গবেষণার ক্ষেত্রকে উম্মুক্ত দেখতে চাই। হাদীস তথা ওয়াহীভিত্তিক জ্ঞানার্জনের দিকে আমাদের ভাই বোনদেরকে উৎসাহ দিতে চাই, ইনশা আল্লাহ ।
সুহৃদ পাঠক পাঠিকা!
মনে রাখবেন এ মহান জ্ঞানার্জনের রাস্তা সকল প্রকার তাকলীদ, মাযহাবী ও বিদআতি পন্থা বাদ দিয়ে কেবল ওয়াহীর দেখানো পথে চলাই আমাদের মানহাজ । এটিই আল্লাহ্ নবী মুহাম্মাদ (সালায়ার), প্রথম তিন যুগের ও তৎপরবর্তী সকল সত্যপন্থী সালাফগণের শিক্ষা। এটাই আহলে হাদীস তথা সালাফিয়্যাতের মূলনীতি। মহান আল্লাহ্ তাআলা বলেন,
তাতে যে ধ্বংস হবে সে যেন সত্য সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ হওয়ার পর ধ্বংস হয়, আর যে জীবিত থাকবে সে যেন সত্য সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ হওয়ার পর জীবিত থাকে। (সুরাহ আনফাল ৪২)
সুতরাং সত্য মিথ্যা, হক ও বাতিল সব ওয়াহী দিয়েই নির্ধারিত হোক। ওয়াহীর আলোকচ্ছটায় দূরীভূত হোক সকল সংশয়। উদ্ভাসিত হোক তাওহীদপন্থীদের সত্যবাণী । ওয়া বিল্লাহিত তাওফীক।
আৰু হাযম সাকিব চৌধুরী
২৮শে সাফার, ১৪৪২ হিজরী, পূর্ব লন্ডন, যুক্তরাজ্য

সালাসাতুল উসুল
Reviews
There are no reviews yet.