শির্ক কী ও কেন?
প্রকাশনায়: এডুকেশন সেন্টার সিলেট(ইসিএস)
পরিবেশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স
বিষয়: শির্ক
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৫২৫
কভার: হার্ড কভার
শিরক কী? শিরকের সবচেয়ে বড় পরিচয় এই যে, এটাই একমাত্র পাপ যা দয়াময় আল্লাহ কুরআনে আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দিয়েছেন যে তা ক্ষমা করা হবে না। আল্লাহ বলেন,“নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শরীক্ করা ক্ষমা করেন না। এটি ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং কেহ আল্লাহর শরীক্ করলে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়।” (সুরা, নিসা-৪:১১৬)
কি এই শিরক যা আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না? কেন এই পাপ এত ভয়াবহ? কোন কাজগুলো করলে আল্লাহর সাথে শরীক করা হয়? শিরক থেকে বেঁচে থাকার উপায়গুলো কি? দ্বীনের এরকম অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই এই বই ‘শিরক কী ও কেন?’। লিখেছেন ডক্টর মুহাম্মাদ মুযযাম্মিল আলী।
শির্ক কী ও কেন?
ড. মুহাম্মদ মুয্যাম্মিল আলী
অধ্যাপক
আল-হাদীস এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
প্রকাশনায় :
এডুকেশন সেন্টার সিলেট
পরিবেশনায় :
তাওহীদ পাবলিকেশন্স ঢাকা
সূচীপত্র
ভূমিকা
প্রথম অধ্যায়
- শিক ও যুগে যুগে এর বহিঃপ্রকাশ
প্রথম পরিচ্ছেদ
- শির্ক শব্দের অর্থ ও এর প্রকারভেদ
- শির্ক শব্দের আভিধানিক অর্থ
- শিক শব্দের পারিভাষিক অর্থ
- আল্লাহ তা’আলার রুবূবিয়্যাতের বৈশিষ্ট্য
- আল্লাহ তা’আলার উলূহিয়্যাতের বৈশিষ্ট্য
- আল্লাহ তা’আলার উত্তম নামাবলী ও গুণাবলীর বৈশিষ্ট্য
- আল্লাহর সত্তাগত নামাবলী
- আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে মহামান্য ইমামগণের মত
- শিরকের প্রকারভেদ
- শিরকে আকবার এর সংজ্ঞা
- শিরকে আকবারকারীর পরিণতি
- দ্বিতীয় প্রকার শিরকে আসগার বা ছোট শির্ক
- শর’য়ী দৃষ্টিতে শিরকে আসগারকারীর পরিণতি
- শিরকে খফী বা গোপন শির্ক
- শিরকে আকবার ও শিরকে আসগার এর মধ্যে পার্থক্য
- শিরকে আকবার এর প্রকার
- শিরকে আকবার এর প্রথম প্রকার : জ্ঞানগত শির্ক
- রাসূলুল্লাহ এর অদৃশ্য জ্ঞান
- রাসূল্লাহ এর ন্যায় অপর কেউই অদৃশ্য সম্পর্কে অবগত নয়
- ইলমে গায়েব সম্পর্কিত সংশয় নিরসন
- আল্লাহর অলিগণ গায়েব সম্পর্কে কিছুই জানেন না
- রাসূলুল্লাহ-কে সর্বত্র হাজির ও নাজির মনে করা শিরক
- দ্বিতীয় প্রকার : পরিচালনাগত শির্ক
- আল্লাহ তা’আলা এককভাবে মানুষের ভাগ্যের যাবতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণের মালিক ও পরিচালক
- ভাগ্যের প্রতি বিশ্বাসের ব্যাপারে মু’মিনদের কর্তব্য
- ঈমান ও ধৈর্যের পরীক্ষায় মু’মিনের করণীয়
- কোন মানুষ বা কোন বস্তুকে সরাসরি উপকারী বা অপকারী বলা শিক
- আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত মানুষের অপর কোন আশ্রয় স্থল নেই
- তৃতীয় প্রকার : উপাসনাগত শির্ক
- আল্লাহ তা’আলার উপাসনার মাধ্যম
- বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর ফরযকৃত উপাসনাদি
- দু’আ ও এর প্রকার
- শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপাসনা
- দাঁড়িয়ে বিনয় ও আনুগত্য প্রকাশ
- সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রুকূ’ ও সেজদা করা
- কারো সম্মানার্থে মাথা নত ও কদমবুসী করা
- কাউকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য সেজদা করা
- লোক দেখানো নামায
- কা’বা গ্রহের হজ্জ
- কা’বা গৃহ নির্মাণ ও এর হজ্জ করার নির্দেশের মূল উদ্দেশ্য কা’বা গৃহ, মিনা, মুযদালিফাহ ও আরাফার ময়দানে যা করা এবাদত অন্যত্র করা শির্ক
- পশু যবাই ও উৎসর্গ
- যবাই সঠিক হওয়ার শর্ত
- কোন মাযারে মানত পূর্ণ করা শির্ক
- কবর কিভাবে মেলার স্থান ও প্রতিমায় পরিণত হয়?
- দান ও সদক্বা
- দান ও সদক্কা সঠিক হওয়ার শর্ত মানত
- অন্তরের উপর ফরযকৃত গোপন উপাসনাসমূহ
- আল্লাহ তা’আলার রুবূবিয়্যাত ও উলূহিয়্যাতের প্রতি ঈমান
- আল্লাহ তা’আলা ও রাসূলুল্লাহ -এর প্রতি মহব্বত ভালবাসার প্রকারভেদ
- গোপন ভয়ের উপাসনা
- ভয়ের প্রকারভেদ
- কামনার উপাসনা
- ভরসার উপাসনা
- কর্ম না করে আল্লাহর উপর ভরসা করা অবৈধ
- আনুগত্য ও অনুসরণের উপাসনা
- তাকলীদ করার সরল ও সঠিক পন্থা
- অন্তরকে সর্বদা আল্লাহমুখী করে রাখার উপাসনা
- শিরকে আকবরের এর চতুর্থ প্রকার : অভ্যাসগত শিক
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
- আদি মানুষেরা তাওহীদ পন্থী ছিল না শিরক পন্থী? ধর্ম ও আল্লাহ তা’আলার বাস্তবতা|
- তাওহীদী বিশ্বাস কোন বিবর্তিত চিন্তার ফসল নয়
- সৃষ্টির সূচনা লগ্নে মানুষেরা কোন চিন্তায় বিশ্বাসী ছিল ?
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
- সর্ব প্রথম কোন জাতি শিরকে লিপ্ত হয়
- আদম (আ.)-এর সন্তানদের পথভ্রষ্ট হওয়ার প্রকৃতি
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
- প্রাক ইসলামী যুগে আরব জনপদে প্রচলিত শির্ক
- মক্কাবাসীদের ধর্মীয় অবস্থার অবনতি
- আরব জনপদে উল্লেখযোগ্য মূর্তিসমূহ লাত, উয্যা ও মানাতকে নারীর নামে নামকরণ করার কারণ
- ফেরেশতাদের উপাসনা
- জিনের উপাসনা
- পাথর পূজা
- গৃহ পূজা
- দেব-দেবীদের ধরন ও প্রকৃতি
- মুশরকিরা পাথরের মূর্তি ছাড়াও ফেরেশতা, মানুষ ও জিনদের উপাসনা করতো?
আরব জনপদে প্রচলিত শিরকী কর্মকাণ্ড
- কুরায়শ ও আরবদের জ্ঞানগত শির্কী কর্ম
- কুরায়শ ও আরবদের পরিচালনাগত শির্কী কর্ম দেবতারা আল্লাহর নিকটবর্তী করে দিতে সক্ষম
- আউলিয়া নামের দেবতাদেরকে শাফা’আতকারী মনে করা দেবতার নিকট থেকে ভাগ্য যাচাই করা
- পৃথিবীর ঘটনা প্রবাহে নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করা
- ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদেরকে প্রতিপালকের বৈশিষ্ট্য দান করা
- কোন কোন রোগ নিজ থেকে সংক্রমিত হয় বলে বিশ্বাস করা
- আরব জনপদে প্রচলিত উপাসনাগত শির্কী কর্ম
- চন্দ্র ও সূর্যকে সেজদা করা
- দেবতাদের যিয়ারতে দূর-দূরান্তে সফর করা
- দেবতাদের চার পার্শ্বে প্রদক্ষিণ করা
- দেবতাদের পার্শ্বে অবস্থান করা
- দেবতাদের নিকট প্রার্থনা করা
- দেবতাদের উদ্দেশ্যে হাদিয়া ও মানত দান করা
- বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে দেবতাদের গায়ে হাত বুলানো
- অন্তরের উপাসনার ক্ষেত্রে তাদের শিক
- দেবতাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা
- দেবতাদের অনিষ্টের গোপন ভয় করা
- বিপদে দেবতাদের শরণাপন্ন হওয়া
- বিপদে দেবতাদেরকে আশ্রয় স্থল হিসাবে মনে করা
- দেবতাদের উপর ভরসা করা
- আরব জনপদে প্রচলিত অভ্যাসগত শিক
- দেব-দেবীদের নামে শপথ করা
- দেব-দেবীদের নামে সন্তানাদির নাম রাখা
- আউলিয়া নামের দেবতাদেরকে শাফা’আতকারী মনে করা দেবতার নিকট থেকে ভাগ্য যাচাই করা
- পৃথিবীর ঘটনা প্রবাহে নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করা
- ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদেরকে প্রতিপালকের বৈশিষ্ট্য দান করা
- কোন কোন রোগ নিজ থেকে সংক্রমিত হয় বলে বিশ্বাস করা
- আরব জনপদে প্রচলিত উপাসনাগত শির্কী কর্ম
- চন্দ্র ও সূর্যকে সেজদা করা
- দেবতাদের যিয়ারতে দূর-দূরান্তে সফর করা
- দেবতাদের চার পার্শ্বে প্রদক্ষিণ করা
- দেবতাদের পার্শ্বে অবস্থান করা
- দেবতাদের নিকট প্রার্থনা করা
- দেবতাদের উদ্দেশ্যে হাদিয়া ও মানত দান করা
- বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে দেবতাদের গায়ে হাত বুলানো
- অন্তরের উপাসনার ক্ষেত্রে তাদের শিক
- দেবতাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা
- দেবতাদের অনিষ্টের গোপন ভয় করা
- বিপদে দেবতাদের শরণাপন্ন হওয়া
- বিপদে দেবতাদেরকে আশ্রয় স্থল হিসাবে মনে করা
- দেবতাদের উপর ভরসা করা
আরব জনপদে প্রচলিত অভ্যাসগত শির্ক
- দেব-দেবীদের নামে শপথ করা
- দেব-দেবীদের নামে সন্তানাদির নাম রাখা
- আউলিয়া নামের দেবতাদেরকে শাফা’আতকারী মনে করা দেবতার নিকট থেকে ভাগ্য যাচাই করা
- পৃথিবীর ঘটনা প্রবাহে নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাস করা
- ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদেরকে প্রতিপালকের বৈশিষ্ট্য দান করা
- কোন কোন রোগ নিজ থেকে সংক্রমিত হয় বলে বিশ্বাস করা
- আরব জনপদে প্রচলিত উপাসনাগত শির্কী কর্ম
- চন্দ্র ও সূর্যকে সেজদা করা
- দেবতাদের যিয়ারতে দূর-দূরান্তে সফর করা
- দেবতাদের চার পার্শ্বে প্রদক্ষিণ করা
- দেবতাদের পার্শ্বে অবস্থান করা
- দেবতাদের নিকট প্রার্থনা করা
- দেবতাদের উদ্দেশ্যে হাদিয়া ও মানত দান করা
- বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে দেবতাদের গায়ে হাত বুলানো
- অন্তরের উপাসনার ক্ষেত্রে তাদের শিক
- দেবতাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা
- দেবতাদের অনিষ্টের গোপন ভয় করা
- বিপদে দেবতাদের শরণাপন্ন হওয়া
- বিপদে দেবতাদেরকে আশ্রয় স্থল হিসাবে মনে করা
- দেবতাদের উপর ভরসা করা
- আরব জনপদে প্রচলিত অভ্যাসগত শিক
- দেব-দেবীদের নামে শপথ করা
- দেব-দেবীদের নামে সন্তানাদির নাম রাখা
- জিন ও জিন সাধকরা অদৃশ্য সম্পর্কে জানতে পারে বলে বিশ্বাস করা পাখি বা বানরের মাধ্যমে ভাগ্য জানার চেষ্টা করা
- আল্লাহর অলিগণ গায়েব সম্পর্কে জানেন ?
পরিচালনাগত শির্ক
- বিপদ মুক্তির জন্য খতমে নাবী পাঠ করা
- রাসূল-এর প্রশংসা ও স্তুতি বর্ণনা করে তাঁকে আল্লাহর অবতারে পরিণত করা
- অলিগণের মধ্যে যারা গউছ ও কুতুব তারা পৃথিবী পরিচালনা করেন বলে বিশ্বাস করা
- অলিগণ কি মানুষের কল্যাণ করতে পারেন ?
- মাযারস্থ অলিগণ কি আহ্বানকারীদের আহ্বান শুনতে পারেন ?
- আল্লাহই সকল কল্যাণ ও অকল্যাণের মালিক
- কবরে অব্দুল কাদির জীলানীর হস্তক্ষেপে বিশ্বাস
- আব্দুল কাদির জীলানীকে দস্তগীর নামে অভিহিত করণ
- রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের জনগণকে সকল ক্ষমতার মালিক বলে মনে করা
- আউলিয়াদের কবর ও মাযারের মাটি, গাছ, নিকটস্থ কূপের পানি ও জীব-জন্তুর দ্বারা উপকারে বিশ্বাস করা
- মানব রচিত বিধান ও আইন দ্বারা দেশ শাসন ও বিচার কার্য্য পরিচালনা করা
- জিনের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য জিনকে শিরনী দান
- ভাগ্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পাথরের প্রভাবে বিশ্বাস করা
- রাসূলুল্লাহ-এর পেটে বাধা পাথরের দ্বারা উপকারে বিশ্বাস
- নিম্নজগতের উপর উর্ধ্বজগতের তারকারাজির প্রভাবে বিশ্বাস করা
- মানুষের উপর কোন গ্রহের প্রভাব থাকা মিথ্যা হওয়ার বাস্তব প্রমাণ
উপাসনাগত শির্ক
- আল্লাহ তা’আলার নামের জিকরের সাথে বা এককভাবে রাসূলুল্লাহ -এর নামের জিকর করা
- কবরমুখী হয়ে বা কবরের পার্শ্বে নামায আদায় করা
- দ্রুত দু’আ কবুল হওয়ার আশায় মুরশিদ বা পীরের বৈঠকখানার দিকে মুখ করে দু’আ করা
- আউলিয়াদের নিকট কিছু কামনা করা
- আউলিয়াদেরকে সাহায্যের জন্য আহ্বান করা
- আউলিয়াদের কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে বিনয় প্রকাশ করা
- আল্লাহর এবাদতের জন্য কবরের পার্শ্বে এ’তেকাফ বা অবস্থান করা কবরের চার পার্শ্বে প্রদক্ষিণ বা ত্বওয়াফ করা
- কবরকে সামনে রেখে রুকু ও সেজদা করা
- কবর, মাজার, দরবার ও মুকামে মানত করা গায়রুল্লাহের নামে পশু যবাই করা
- আল্লাহর ভালবাসার ন্যায় নিজের পীরকে ভালবাসা
- অন্তরে পীর ও অলিদের অনিষ্টের গোপন ভয় করা
- আল্লাহ ব্যতীত অন্যের উপর ভরসা করা
- আল্লাহ ও রাসূল ব্যতীত কোন মানুষের মত ও পথের নিঃশর্ত আনুগত্য ও অনুসরণ করা
- নির্দ্দিষ্ট করে এক মাযহাব অনুসরণের সম্ভাব্য স্থান
- সকল বিষয়ে নিৰ্দ্দিষ্ট করে এক মাযহাব পালন করা জরুরী না হওয়ার কারণ বিশুদ্ধ হাদীসের বিপরীতে অন্ধভাবে মাযহাব পালনের বাস্তব উদাহরণ অনুসরণের ব্যাপারে সাধারণ ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতদের অবস্থা পীরের নিকট রহমত ও করুণা কামনা করা
অভ্যাসগত শিরকের উদাহরণ
- রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে ধাতব দ্রব্য দ্বারা নির্মিত আংটি বা বালা পরিধান করা
- জিন বা অপর কোন রোগের অনিষ্ট থেকে আত্মরক্ষার জন্য শরীরে তা‘বীজ ব্যবহার করা
- অধিকাংশ মুসলমানদের শিরকে পতিত হওয়ার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ কারণ প্রথম পরোক্ষ কারণ : ইসলামের সঠিক আকীদা সম্পর্কে তারা অজ
- দ্বিতীয় পরোক্ষ কারণ : শয়তানের চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র
মুসলমানদের শিরকে লিপ্ত হওয়ার প্রত্যক্ষ কারণ সমূহ
- প্রথম কারণ : রাসূলুল্লাহ ও অলিগণের সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন
- রাসূলুল্লাহ কে এর কবর নিজ গৃহে দেয়ার কারণ
- মানুষকে সম্মান করা নিয়ে বাড়াবাড়ি করার ধরন
- দ্বিতীয় কারণ : রাসূলুল্লাহ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা এ
- তৃতীয় কারণ : বস্তুর সাথে কল্যাণ ও অকল্যাণের সম্পর্ককরণ
- চতুর্থ কারণ : নিম্ন জগতের উপর উর্ধ্বজগতের গ্রহ ও নক্ষত্রের প্রভাবে বিশ্বাসী হওয়া
- পঞ্চম কারণ : আল্লাহর উপাসনায় অলিগণকে শরীক করা
- ষষ্ট কারণ : অলিগণকে আল্লাহ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী ও শাফা’আকারী হিসেবে মনে করা
- সপ্তম কারণ : পীর ও মুরব্বীদের কথা-বার্তা ও হেদায়তী বাণীসমূহের অন্ধ অনুসরণ করা
- অষ্টম কারণ : ইমামগণের ইজতেহাদী উক্তি সমূহ পালনের ক্ষেত্রে শরী’আতের সীমালঙ্ঘন করা
- নবম কারণ : দু’আ করার সময় ওসীলা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা
- দশম কারণ : অলিগণের শাফা’আত সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করা
ভূমিকা
সকল প্রশংসা সেই আলাহর জন্যেই, যিনি ব্যতীত আমাদের অপর কোন প্রতিপালক ও উপাস্য নেই। দরূদ ও সালাম সেই রাসূল, তাঁর পরিবার ও সাহবীদের প্রতি, যাঁর অনুসরণ, আনুগত্য ও ভালবাসা ব্যতীত আমাদের ইহকাল ও পরকালে শান্তি ও মুক্তির কোনই উপায় নেই। কেয়ামত দিবস পর্যন্ত যারা এককভাবে আল্লাহ তা’আলাকেই তাদের প্রতিপালক ও উপাস্য হিসেবে গণ্য ক’র এবং মুহাম্মদ-কে আল্লাহ তা’আলার সর্বশেষ রাসূল হিসেবে মনে করে নিঃশর্তভাবে কেবল তাঁরই আদর্শের অনুসরণ ও অনুকরণ করে, তাদের উপরেও আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক ।
অতঃপর, আমরা মৃত্যুর সাথে সাথে এমন এক জগতে পদার্পণ করবো যেখানে চিরস্থায়ী শান্তি আর অনাবিল আনন্দ কেবল তাদের জন্যেই অপেক্ষা করছে, যারা সেখানে সঠিক ঈমান ও ‘আমলের অধিকারী বলে স্বীকৃতি লাভে ধন্য হবে। আর চিরস্থায়ী শাস্তি আর অকল্পনীয় দুঃখ ও দুর্দশা কেবল তাদের জন্যেই অপেক্ষা করছে, যারা সেখানে শিরকের মত ক্ষমার অযোগ্য অপরাধে দণ্ডিত হবে।
এ পৃথিবী হচ্ছে মানুষের পরকালে শান্তিময় জীবন লাভের কর্ম ক্ষেত্র । মানুষ যাতে এখানে আল্লাহ তা’আলার তাওহীদে বিশ্বাসী হয়, সে-জন্যে রয়েছে তাঁর নানারকম আয়োজন । আমরা রূহ জগতে থাকাকালে তিনি যেমন এ-জন্য আমাদের নিকট থেকে তাঁর রুবূবিয়্যাতের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত স্বীকৃতি নিয়েছেন, তেমনি আমাদেরকে এখানে সৃষ্টি করার সময়ও তাঁকে স্বীকৃতি দানের উপযোগী করে সৃষ্টি করেছেন। আবার যখনই মানুষেরা পারিপার্শ্বিক বিবিধ কারণে তাঁর তাওহীদ থেকে বিচ্যুত হয়ে তাঁর রুবূবিয়্যাত ও উলূহিয়্যাতে শিরকে লিপ্ত হয়েছে, তখনই তিনি তাদের হেদায়তের জন্যে যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন নবী ও রাসূল। তাঁদের সাথে দিয়েছেন হেদায়তের অমিয় বাণী। এ ধারাবাহিকতায় বিশ্ব মানবতার হেদায়তের জন্যে সর্ব শেষ রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন মুহাম্মদ -কে। তাঁকে দিয়েছিলেন তাঁর সর্বশেষ বাণী আল-কুরআন। যার প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ তিনি করেছেন তাঁর সুন্নাতের মাধ্যমে। যারাই তাঁকে ভালবেসে নিঃশর্তভাবে এ দু’য়ের অনুসরণ ও অনুকরণ করবে, তারাই হবে সেখানে সফলকাম। কিন্তু মানুষের এ সফলতার সম্মুখে অন্তরায় হচ্ছে তাদের চির শত্রু শয়তান। আদম (আ)-কে সেজদা না করার ফলে যেদিন সে আল্লাহর অভিসম্পাত প্রাপ্ত হয়েছিল, সেদিনই সে আদম সন্তানদেরকে তার মতই অভিশপ্ত করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছিল । সে বলেছিল : “আপনি যেমন আমাকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করলেন তেমনি আমিও অবশ্য (এ আদমের সন্তানদেরকে) পথভ্রষ্ট করার জন্য আপনার সরল পথে বসে থাকব, অতঃপর তাদের সমুখ, পশ্চাৎ, ডান ও বাম দিক থেকে তাদের কাছে আসব। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না । ১ বস্তুত শয়তান তার এ সংকল্প বাস্তবায়ন করার জন্যে নানারকম অপকৌশল গ্রহণ করে চলেছে। আর সে সব অপকৌশলের মাধ্যমে সে বনী আদমকে জড়িত করেছে বিবিধ রকমের অপরাধমূলক কর্মে। যার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ অপরাধ হচ্ছে শির্ক। এ শির্কজনিত কারণেই সে অতীতের কাওমে নূহ, ‘আদ ও ছামূদ…ইত্যাদি জনপদের লোকদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল । সৃষ্টিকর্তা, জীবন-জীবিকা, মৃত্যু ও সব কিছুর মূল পরিচালক হিসেবে আল্লাহ তা’আলাকে স্বীকৃতিদানকারী, দ্বীনে ইব্রাহীমের অনুসারীর দাবীদার, কা’বা শরীফের খাদেম কুরায়শ ও আরব জনপদের লোকদেরকেও সে এ শিরকের মাধ্যমেই পথভ্রষ্ট করেছিল। তাদেরকে কতিপয় সমানুষ এবং লাত, উজ্জা ও মানাত নামের কাল্পনিক দেবীসমূহ ছাড়াও আরো অসংখ্য প্রতিমা ও দেব- দেবীকে আল্লাহ তা’আলার রুবূবিয়্যাতের কোন কোন বৈশিষ্ট্যে শরীক বলে ধারণা দিয়ে তাদের উপাসনায় লিপ্ত করেছিল। আল্লাহর অলি ও সে-সব দেব-দেবীকে আল্লাহ তা’আলা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী ও সুপারিশকারীর ভূমিকা পালনকারী বলেও তাদেরকে ধারণা দিয়েছিল। এবং তাঁদের মধ্যস্থতা ও সুপারিশ পাওয়ার নিমিত্তে আল্লাহর উপাসনার পাশাপাশি এদেরও নানাবিধ উপাসনা করতে অভ্যস্ত করেছিল । তৎকালে হাতে গণা কিছু লোক ব্যতীত অবশিষ্ট সকল লোকদেরকেই বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে শয়তান তার অতীত সংকল্পকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিল। সে জন্য পবিত্র হওয়ার সময়ের মানুষের ঈমান ও আমলের শোচনীয় অবস্থা বিচারে আল্লাহ তাআলা বলেছিলেন ” আর শয়তান তাদের উপর তার ধারণা সত্যে পরিণত করেছিল। হলে তাদের মধ্যে মুমিনদের একটি দল ব্যতীত সকলেই তার পথ অনুসরণ করেছিল”
তবে আল্লাহ তাআলার অপার অনুগ্রহে সর্বশেষ নবীর শুভাগমন এবং তাঁর ও তাঁর যোগ্য উত্তরসূরীদের সুযোগ্য নেতৃত্বে ইসলামের জয়যাত্রার ফলে আরব বিশ্বসহ এর পার্শ্ববর্তী ও রোমান অঞ্চল থেকে শিক বিতাড়িত হাড়ে সেখানে তাওহীদের পতাকা উড্ডীন হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল তাওহীদের অমিয় বাণী। যার ফলে ছিল হয়েছিল শয়তানের দীর্ঘ দিনের পাতানো চক্রান্তের জাল। আমাদের দেশসহ বিভিন্ন দেশের অধিকাংশ মানুষ শয়তানের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে পরিণত হয়েছিল এক আল্লাহর নামে। সভ্যতার উত্থান ও পতন এটি যেন ইতিহাসের একটি অমোঘ বিধান। তাই এ বিধানের হাত থেকে ইসলামও রক্ষা পায়নি। অতীতের বিভিন্ন জাতির লোকেরা যেমন শয়তানের চক্রান্তে পড়ে ধীরে ধীরে সঠিক দ্বীন পালন থেকে বিচ্যুত হয়ে পুনরায় শিরকে নিমজ্জিত হয়েছিল, ঠিক তেমনি ইসলামের পরবর্তী অসংখ্য অনুসারীরাও শয়তানের চক্রান্তে পড়ে ধীরে ধীরে সঠিক দ্বীন পালন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। শয়তান অতীতের মানুষদেরকে যে-সব ধ্যান-ধারণা দিয়ে ও অপকৌশল প্রয়োগ করে বিভ্রান্ত করে আল্লাহর রুবিয়্যাত ও উন্নহিয়াতে শিরকে লিপ্ত করেছিল, সে সব ধ্যান-ধারণা ও অপকৌশল প্রয়োগের মাধ্যমেই সে অসংখ্য মুসলমানকেও আল্লাহর রুবিয়্যাত ও উলুহিয়্যাতে শিকে লিও করেছে। তাই শিকের মত যখন অপরাধে আজ বিশ্বের অসংখ্য মুসলমান জর্জরিত। প্রবল প্রতাপের সাথে যে- সব স্থানে ইসলাম তার তাওহীদী চিন্তাধারা নিয়ে প্রবেশ করে শিককে বিদায় জানিয়েছিল, বহুযুগ পূর্বেই সে সব স্থানের সাধারণ মুসলিমদের মাঝে তাওহীদী চিন্তার পাশাপাশি শিকও পুনরায় আপন স্থান করে নিয়েছে। সে হিসেবে আমাদের দেশে তাওহীদের অবস্থা যে কী হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
এখানে যেমন দ্বীন এসেছে অনেক ধীর গতিতে তেমনি আসার পথে প্রভাবিত হয়েছে ভারতীয় হিন্দু বৈরাগ্যবাদের বিষক্রিয়ায়। যার ফলে এদেশের অধিকাংশ মানুষ ইসলাম গ্রহণের প্রাক্কালে প্রকৃত তাওহীদ সম্পর্কেই যথার্থ জ্ঞান লাভ করতে পারেনি। যারা পেরেছিল তাদের পরবর্তী প্রজন্মের লোকেরা ধর্মীয় শিক্ষার অভাব ও এখানে বৃটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত ফলে সে জ্ঞান বেশী দিন ধরে রাখতে পারেনি। যার ফলে দেখা যায়, যে সব আলেম ও অলিগণ এদেশে এসেছিলেন শিরক বিনাশ করে তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করতে, সময়ের পরিবর্তনে শয়তানের চক্রান্তে পড়ে তাদের ভক্ত ও সাধারণ অজ্ঞ মুসলিমদের দ্বারা স্বয়ং তাঁদের কবর ও মাযারসমূহই শির্ক চর্চা করার একেকটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আল্লাহর রহমতে ধীরে ধীরে ইসলামী জ্ঞানের চর্চা পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে এ সব মাযার ও কবর সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা অনেকটা দূরীভূত হলেও এখনও সাধারণ মানুষের অন্তর থেকে অলিদের ব্যাপারে শির্কী চিন্তাধারার অবসান ঘটেনি। অলিদের মাযার কেন্দ্রিক ছাড়াও এ দেশের সাধারণ মুসলমানদের মাঝে আরো বিভিন্ন উপায়ে শির্কী কর্মকাণ্ড অহরহ হয়েই চলেছে ।
শির্ক মানুষের ধ্যান-ধারণা, কর্ম ও অভ্যাসের মধ্যকার যেখানেই হোক, এটি এমন একটি বিষক্রিয়া যে, যদি কারো জীবনে কখনও একটি মাত্র শিকও সংঘটিত হয়, এবং তাত্থেকে সে ব্যক্তি তাওবা করে মরতে না পারে, তা হলে এই একটি শির্কই তার ঈমান ও জীবনের যাবতীয় সৎকর্মকে নিষ্ফল করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। এ ধরনের লোকদের ঈমান ও ‘আমলের অশুভ পরিণতি সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন : “বলুন : আমি কি তোমাদেরকে সে-সব লোকদের সংবাদ দেব, যারা কর্মের দিক থেকে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত? তারা সে-সব লোক, যাদের পার্থিব জীবনের প্রচেষ্টা বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে তারা সৎকর্ম করছে।”
এ পৃথিবীতে আল্লাহ আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর তাওহীদের স্বীকৃতি দান, এর সংরক্ষণ, প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। এটি এমন একটি কাজ যে, এনিয়ে কারো দ্বিমত পোষণ বা এ নিয়ে মতবিরোধ করারও কোন অবকাশ নেই। সে জন্য মহান আল্লাহ বলেন : “তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে কোন প্রকার মতবিরোধ করো না।”
এ দ্বীন প্রতিষ্ঠার মূল মন্ত্র হচ্ছে কালিমায়ে তাওহীদকে সঠিকভাবে হৃদয়ঙ্গম করা ও এর উপর মৃত্যু পর্যন্ত সুপ্রতিষ্ঠিত থাকা। আর এর উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকার দাবী হচ্ছে এ তাওহীদকে বিনষ্টকারী শির্ক নামের মহা অপরাধটি কী এবং সমাজে এটি কেন সংঘটিত হয়, সে সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান রাখা। তা না হলে যে কোন সময় শয়তানের খপ্পরে পড়ে যে কারো ঈমান ও জীবনের সৎকর্মের যাবতীয় সাধনা ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। এ হেন গুরুতর পরিণতির হাত থেকে যেমন নিজেকে রক্ষা করা আবশ্যক, তেমনি এথেকে দেশবাসী ও বিশ্বের সকল মুসলমানকেও রক্ষা করা আবশ্যক। আর এ আবশ্যকতাবোধই আমাকে এ ব্যাপারে একটি গবেষণাকর্ম চালাতে উদ্বুদ্ধ করেছে। মানব কল্যাণমূলক এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণাকর্মের তৌফিক দানের জন্য আমি সর্বাগ্রে মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। অতঃপর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, একাডেমিক শাখাসহ অন্যান্য শাখার কর্মকর্তা ও কমচারীবৃন্দের, যাঁরা আমাকে “বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে প্রচলিত শির্ক ও বেদ’আত : একটি সমীক্ষা”-এ শিরোনামের উপর পি. এইচ. ডি.গবেষণা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। আমার এ গবেষণাকর্মটি আরবী ভাষায় সম্পাদিত হওয়ার কারণে দেশের জনগণের অধিকতর উপকারের স্বার্থে এর শির্ক অংশটিকে বাংলা ভাষায় প্রকাশের জন্য আমি তাতে প্রয়োজনীয় কিছু সংযোজন ও বিয়োজন করে এর শিরোনাম দিয়েছি “শির্ক কী ও কেন?”। আশা করি, আল্লাহ চাহে তো এ বইখানা পাঠ করলে ইসলাম থেকে বহিষ্কারকারী ও আমল বিনষ্টকারী এ জঘন্য অমার্জনীয় অপরাধ সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত হওয়া সম্ভব হবে এবং সমাজে তা সংঘটিত হওয়ার জন্য পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে কোন্ কোন্ কারণকে দায়ী করা যায়, সে সম্পর্কেও ওয়াকিফহাল যাঁরা আমার এ বইখানা প্রকাশের গুরুদায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়েছেন হওয়া সম্ভব হবে ।আমি তাদেরও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ তা’আলার তাওহীদকে সংরক্ষণ, এর প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করাই হচ্ছে একজন মু’মিনের জীবনের প্রধানতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমি আমার এ বইখানা লেখার প্রয়াস চালিয়েছি। এতে উপস্থাপিত বক্তব্য ও তথ্যাবলী সঠিক হলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়ে থাকবে; আর অনিচ্ছাকৃতভাবে কোথাও কোন ভুল হলে তা হবে আমার ও শয়তানের পক্ষ থেকে। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তি মার্জনা করেন এবং আমার এ প্রয়াসকে কবুল ও মঞ্জুর করেন; এর দ্বারা তিনি যেন বিপথগামী মুসলমানদেরকে সরল ও সঠিক পথের সন্ধান দান করেন।এর ওসীলায় যেন আমাকে, আমার পিতা-মাতা, পরিবার, সন্তানাদি, মু’মিন ও মু’মিনাত আত্মীয় স্বজন এবং এ বইখানা লিখতে ও তা প্রকাশ করতে যারা নিষ্ঠার সাথে আমাকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের সকলকে পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করে জান্নাত নসীব করেন, আমীন ছুম্মা আমীন ।
ড. মুহাম্মদ মুয্যাম্মিল আলী অধ্যাপক
আল-হাদীস এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

শির্ক কী ও কেন?
Reviews
There are no reviews yet.