Parturient ut id tellus vulputatre ac ultrlices a part ouriesnt sapien dignissim partu rient a a inter drum vehicula. Ornare metus laoreet tincidunt eros rolem tristique pretium malada.
Cras rhoncus vivamus luctus platea arcu laoreet selm. Curae est condenectus sed hac a parturient vestibulum.
তাকলীদ হল দলীল বিহীন কারো কথা মেনে নেয়া। দলীল বিহীন কারো অন্ধ অনুসরণ সঠিক দ্বীন প্রচারের পথে বড় বাধা। মানুষ আজ তাকলীদ জালে আটকা পড়েছে। এই তাকলীদের অসারতা ও অকার্যকারিতা এবং এর পক্ষে যে সব দলীল উপস্থাপন করা হয় সারগর্ভ আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর অসারতা তুলে ধরে হাফেজ জালাল উদ্দীন কাসেমী যে বইটি লিখেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ পাঠকের সাথে, তালেবে ইলমগণ এ বইটি পড়লে অনেক বিষয় সম্পর্কে সূষ্পষ্ট ধারণা পাবেন এবং উপকৃত হবেন।
বইটির অরিজিনাল উর্দু নাম হচ্ছে ‘তাকলীদ কী শারঈ হ্যায়সিয়্যাত (ইশকালাত অর শুবুহাত কা ইযালা)’, এর বাংলা নাম দেওয়া হয়েছে ‘শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ (প্রশ্ন ও সংশয় নিরসন)’। বইটির বাংলা অনুবাদ করেছেন শাইখ নুরুল আবসার এবং পরিবেশন করছে তাওহীদ পাবলিকেশন্স।
আলহাম্দু লিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর যিনি মানবজাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে নির্বাচন করেছেন। শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হলো তার মেধা ও জ্ঞান। মানুষ তার মেধা দিয়ে পরখ করে বুঝতে পারে ভাল ও মন্দ । ভাল মন্দ পরখ করে বিবেক খাটিয়ে চলার জন্যই তার এই শ্রেষ্ঠত্ব। কিন্তু কিছু বিষয় এমন আছে যা তার মেধার আয়ত্বের বাইরে। আয়ত্বের বাইরের সেই বিষয়ে মেধাকে মানদণ্ড বানালে তার বিপথগামী হওয়া অনিবার্য। শ্রেষ্ঠ মাখলুকগুলো যাতে বিপথগামী না হয় তাই যুগে যুগে আল্লাহ তা’আলা পাঠিয়েছেন অনেক নবী-রাসূল। যারা একটু বিবেক খাটিয়েছে এবং নরীর সংবাদকে নিরঙ্কুশভাবে মেনে নিয়েছে তারাই হেদায়াত প্রাপ্ত হয়েছে। আর যারা মেধাকে নবীর কথার উপর প্রাধান্য দিয়েছে এবং আল্লাহর দেয়া এই শ্রেষ্ঠ নেয়ামতকে একটুও না খাটিয়ে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া রীতি-নীতির উপর অবিচল থেকেছে তারা গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
আল্লাহর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (স)। কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী আসবেন না। তাই কিয়ামত পর্যন্ত সব মানুষকে তাঁর বিধানকেই নির্দ্বিধায় মেনে নিতে হবে। তাঁর বিধানই মূলত আল্লাহর বিধান। কিন্তু তাঁর ওফাতের পরের মানুষগুলো তো তাকে পাবে না। সেই মানুষগুলো যেন বিপথগামী না হয় সে জন্য আল্লাহ তাঁর নিজের বাণীর মতই নবীর বাণীগুলো হেফাজতের ব্যবস্থা করেছেন। এখন মানুষের কাজ হলো তাঁর রেখে যাওয়া বাণী ও নির্দেশনাগুলোর অনুসন্ধান করা এবং এর উপর আমল করা। জ্ঞানের উর্দ্ধ বিষয়ে কোন সময়ই মাথা না ঘামানো । জ্ঞানায়ত্ব বিষয়ে নিজ মেধা থেকে গবেষণার মাধ্যমে কিছু বলে থাকলে এর বিপরীত যদি তাঁর কোন বাণী এসে যায় তবে সাথে সাথে তা প্রত্যাখ্যান করতঃ তাঁর বাণী ও আমলের দিকে ফিরে যাওয়া। এটাই ছিল খাইরুল কুরুন তথা সোনালী তিন শতাব্দীর আলেমদের রীতি।
শ্রদ্ধেয় মহামান্য মুজতাহিদ ইমামরা বিশেষ করে আজ পৃথিবীর আনাচে কানাচে যাদের সুনাম, সুখ্যাতি, পান্ডিত্য সার্বজনিন তাদের সবাই এই রীতির উপর চলেছেন। তারা এই রীতির উপর না থাকলে- না ইমাম আবূ হানিফা মুজতাহিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতেন, না ইমাম মালেক, ইমাম শাফেঈ, না ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল । ইমাম আবূ হানিফা। এর ছাত্র হয়ে আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ ও যুফারের নাম ইমাম ও মুজতাহিদের তালিকায় থাকত না। আবূ হানিফা (রহ) এর ছাত্রের ছাত্র শাফিঈর নাম মুজতাহিদের তালিকাভুক্ত হওয়া থেকে শত মাইল দূরে থাকত। ইমাম আহমাদ (মাহি) তাঁর পূর্বের তিন জনের যে কোন একজনের কথা নির্দ্বিধায় মেনে নিয়ে চলতে পারতেন, তিনিও মুজতাহিদের তালিকায় আসতেন না। মোটকথা, চার জনের কারো নামই মুজতাহিদের তালিকায় থাকত না। আবূ হানিফা (জাসাস) যদি তাঁর কোন একজন উস্তাযের নিরঙ্কুশ অনুসরণ করে যেতেন তবে তার নাম ইমাম আ’যম দূরের কথা ইমামের তালিকায়ও আসার কথা নয় ।
কিন্তু না। কেননা তারা দ্বীনকে আমাদের তুলনায় অনেক বেশি বুঝেছিলেন। বুঝেছিলেন কার কথা দ্বিধাহীনভাবে মেনে নিতে হবে আর কার কথা যাচাই করে মানতে হবে। কোন কথা বললে আর কোন গবেষণার সুযোগ নেই, কোন কথা বললে আরো গবেষণার সুযোগ রয়েছে। কোন কথায় দ্বীমত পোষণের সুযোগ নেই, কোন কথায় দ্বীমত পোষণ করা যেতে পারে। সবাই তাদের অনুসারীদের কঠোর ভাষায় সতর্ক করে গেছেন এই বলে, কেউ যেন তাদের কথাকে নবীর কথার স্থান না দেয়, তাদের আমলকে নবীর আমলের মর্যাদা না দেয়। একমাত্র যে কথা ও আমলটি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর কথা ও আমলের সাথে মিলবে কেবল সেই কথা এবং মতামতটিকেই নিজের জীবনের অনুসরণীয় বলে জানবে। তাই তাদের কেহই একক আবূ বাকর (র) হননি, এককভাবে উমার এর অনুসরণ করে বাকারী অনুসরণ করে উমারী হননি । একমাত্র আলী (র)-এর অনুসরণ করে আলাবী হননি। শুধুমাত্র আয়েশা (র) মতামতকে মেনে আয়েশী হননি। ইবনে মাসউদ(র)-এর একক অনুসরণ করে মাসউদী হননি। হাদীসের বিশাল ভান্ডারের বর্ণনাকারী আবূ হুরাইরা (র)-এর একক অনুসরণ করে হুরাইরী হননি। মু’আয এর একক অনুসরণ করে মু’আযী হননি। এভাবে ইমাম আবূ হানিফা (রহ) এবং ইমাম মালেক (জেনারেল)-এর এমন অনেক উস্তায ছিলেন যারা মুজতাহিদ হওয়ার সাথে সাথে দীর্ঘ দিন সাহাবাদের সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন। সাহাবাদের সহচর্যপ্রাপ্ত প্রখ্যাত কোন ফক্বীহ্ও একক কোন সাহাবীর অনুসরণ করে তারা সেদিকে সম্পৃক্ত হননি ।
কিন্তু অত্যন্ত আক্ষেপের বিষয় হলেও সত্য যে, অতিভক্তি মানুষের গোমরাহীর অন্যতম কারণ। যে যাকেই মুশরিক বা বিদ’আতী বলে আখ্যা দেন না কেন সবকিছুর পিছনের মূলহোতা এই অতিভক্তি যা শয়তানের অন্যতম অস্ত্র। যেই অতিভক্তির কারণে যে ব্যক্তিকে আপনি বিদ’আতী বা মুশরিক বলছেন সে উল্টো আপনাকে কাফের, বে‘আদব, অকৃতজ্ঞ ইত্যাদিতে ভূষিত করছে। খাইরুন কুরুনের পর প্রসিদ্ধ চার ইমামের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অতিভক্তির জালে ফেঁসে যে নিষেধাজ্ঞা আল্লাহ ও রাসূল ( থেকে তো আছেই, উপরন্তু সেই মহামান্য ইমামদের নিজের ওসিয়তের বিপরীতও মানুষ চলতে দ্বিধা করছে না। তাদের অবাধ্যতাই তাদের অনুসরণ হিসেবে সমাজে স্থান পেয়েছে। ইমামদের মতামত বা তাদের নামে সম্পৃক্ত মতামতের সামনে কুরআন হাদীসও যেন ম্লান হয়ে যায় ৷
শরীয়তের নামে শরীয়ত বিরোধী সব কর্মের পিছনেই মানুষ একটা না একটা দলীল প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। এই অতিভক্তির বৈধতা দেয়ার জন্য তাক্বলীদ নামের শব্দটির ভিন্ন অর্থ দাড় করানো হয়েছে। অপব্যাখ্যা করা হয়েছে কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন শব্দে কুরআন হাদীসের মূল অর্থ যা নবী বা সাহাবায়ে কেরাম বুঝেছিলেন সেই অর্থ থেকে পলায়ন করে নিজের মেধাপ্রসূত অর্থ দাঁড় করিয়ে এর বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মানুষ আজ তাক্বলীদের বিড়ম্বনার শিকার। সাধারণ থেকে নিয়ে বিশেষ ব্যক্তিবর্গ পর্যন্ত এর জালে আটকা পড়েছেন ।
যাই হোক, এই তাক্বলীদের অসারতা ও অকার্যকারিতা এবং এর পক্ষে যে সব দলীল উপস্থাপন করা হয় সারগর্ভ আলোচনার মাধ্যমে সেগুলোর অসারতা তুলে ধরে হাফেজ জালাল উদ্দীন কাসেমী যে শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি লিখেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “তাক্বলীদ কী শারঈ হাইসিয়্যাত, ইশকালাত আওর শুবুহাত কা ইযালাহ” অর্থাৎ ‘শরঈ মানদন্ডে তাক্বলীদ, প্রশ্ন ও সংশয়ের নিরসন’ নামের মূল উর্দু বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদের গুরুত্ব অপরিসীম দেখে শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি বাংলাভাষীদের জন্য অনুবাদে হাত দেই। শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি পড়লে যে কেহ অত্যন্ত উপকার পাবেন বলে আমরা শতভাগ আশাবাদী। সাধারণের চেয়ে আলেমদের জন্য শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি আরো বেশি উপকারজনক হবে ইন্শাআল্লাহ ৷
প্রত্যেক ভাষার নিজস্ব রীতি রয়েছে। তাই যে কোন বই লেখার চেয়ে অনুবাদ করতে আরো বেশি হিমশিম খেতে হয়। কেননা হুবহু শব্দের অনুবাদে লেখকের মর্ম অনেক ক্ষেত্রে উদ্ধার হয় না, অনেক ক্ষেত্রে জঠিল হয়। আবার ভাবার্থ অনুবাদে বিষয়টি নিজ ইচ্ছেমত চমৎকারভাবে সাজানো যায় তাই এর রীতি থাকলেও অনেক সময় লেখকের উদ্দেশ্য পরিবর্তন হয়ে যায়, ফলে আমানতের খেয়ানত হয় যা প্রথম দোষ থেকে আরো অনেক ভয়ঙ্কর। তাই যথাসম্ভব হুবহু অনুবাদের চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি কুরআন বা হাদীসের অনুবাদের ক্ষেত্রে লেখকের অনুবাদের অনুসরণ করা হয়েছে, তবে মানুষ হিসেবে যেখানে কদাচিৎ ভুল হয়েছে সেখানকার কথা ভিন্ন। হুবহু অনুবাদের চেষ্টার কারণে ভাষাগত অসৌন্দর্য দৃষ্টিগোচর হলে তা আমার দুর্বলতা ও উপরোক্ত কারণ বলে ধরে নিবেন ।
মূল উর্দু বইটি প্রকাশের পূর্বে তার তাহক্বীক বা পর্যালোচনা, তাখরীজ বা হাদীসের তথ্য বের করার কাজ, পুনঃদৃষ্টি ও সহজকরণ এবং সম্পদনার কাজ করা হয়েছে। একাধিক মানুষের যাচাই ও নিরিক্ষণের পর শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি প্রকাশিত হওয়ায় পূর্বের তথ্যের উপরই নির্ভর করা হয়েছে। যেখানে যে তথ্য যেভাবে দেয়া হয়েছে সেখানেতা সেভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে।
দু’আ করি আল্লাহ শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ বইটি থেকে সবাইকে উপকৃত করুন এবং অনুবাদ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন সবার শ্রমকে কবুল করুন। আমীন!
বিনীত:
নুরুল আবসার
শারঈ মানদণ্ডে তাকলীদ
সূচিপত্র
বিষয়:
অনুবাদকের কথা
ভূমিকা
অগ্রকথা
তাক্বলীদ: কুরআন, হাদীস এবং সাহাবায়ে কেরাম বক্তব্যের আলোকে
ড. মুহাম্মদ মুযযাম্মিল আলী
প্রথম প্রকাশ : এপ্রিল ২০১৬ খ্রি.
পরিবেশনায়: তাওহীদ পাবলিকেশন্স ও দারুল কারার পাবলিকেশন্স
প্রচ্ছদ : পেপার ব্যাক কভার
প্রচ্ছদ মূল্য: ৮০.০০ (আশি) টাকা মাত্র
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১১২